করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে বাংলাদেশে তাবলিগ জামাতের সব ধরনের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির একাংশের মুরুব্বি মাওলানা জুবায়ের আহমেদের ছেলে হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ হানজালা।
আজ রবিবার বিকেলে তিনি জানান, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে তাবলিগ জামাতের জনসম্পৃক্ততা হয় এমন সব ধরনের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। বিশেষ করে মসজিদভিত্তিক দাওয়াতি কাজ। তবে এটা আজ থেকে নয়; দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর প্রথম থেকেই সব এলাকায় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত তাবলিগ জামাতের কার্যক্রম স্থগিত থাকবে বলেও তিনি জানান।
এদিকে তাবলিগ জামাতের সাদপন্থীদের মুরুব্বি মাওলানা আব্দুল্লাহ মুনসুর শেখ বলেন, করোনাভাইরাসের এই সঙ্কট মুহূর্তে সরকারের সকল নির্দেশনা মানার জন্য সবাইকে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে তাবলিগ জামাতে গিয়ে এক মুসল্লি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ফরিদপুরের নগরকান্দা থেকে সিঙ্গাইরে তাবলিগ জামাতে গিয়ে ওই ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হলে রাত ১২টায়ই পৌর এলাকা লকডাউন করে স্থানীয় প্রশাসন।
চট্টগ্রামের মেখল মাদ্রাসার শিক্ষক ও তাবলিগের চারিয়া মার্কাজের দায়ী মাওলানা জাকারিয়া নোমান ও তাবলিগ জামাতের আলমী শুরার সদস্য মাওলানা রকিবুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মাওলানা জাকারিয়া নোমান বলেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয়। এমন পরিস্থিতিতে তাবলিগের সব কাজ স্থগিত করা হয়েছে। স্থগিতাদেশের বার্তা আলমী শুরার বড়দের থেকে আমাদের কাছে পৌঁছানো হয়েছে।
মাওলানা জাকারিয়া আরও বলেন, সংকটকালীন পরিস্থিতিতে দেশের বিজ্ঞ ফুকাহায়ে কেরাম যে পরামর্শ দেবেন, সে অনুযায়ী অবশ্যই চলতে হবে বলে আলমী শুরার ওই বার্তায় উল্লেখ করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, আপদকালীন মুহূর্তে মসজিদে ফরজ নামাজ ও বাসায় সুন্নত নামাজ আদায় করার পরামর্শ দিয়েছেন ওলামায়ে কেরামরা।
প্রসঙ্গত, ভারতের রাজধানী দিল্লির নিজামুদ্দিন মার্কাজে তাবলিগ জামাতের একটি সমাবেশে যোগ দেয়ার জন্য হাজার হাজার মানুষ সমবেত হয়। এরপর ওই সমাবেশ থেকে ৩০০ জনের শরীরে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় ভারত জুড়ে আতঙ্ক ও ইসলাম বিদ্বেষ ছড়িয়ে পড়েছে।
এছাড়া মালয়েশিয়াতেও তাবলিগের একটি সমাবেশ থেকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এসব ঘটনার কারণে বাংলাদেশে তাবলিগের কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ দেয়া হয়েছে।