উত্তাল বুয়েট, ৬ দফা দাবিতে ক্লাস পরীক্ষা বর্জন বুয়েট শিক্ষার্থীদের!!

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছেন মধ্যরাতে ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের নেতৃত্বে নেতাকর্মীদের ক্যাম্পাসে প্রবেশের জোরে।

  • Save
  • Save

আন্দোলনের অংশ হিসেবে আগামী ৩০ ও ৩১ মার্চের টার্ম ফাইনাল পরীক্ষাসহ একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করেছেন শিক্ষার্থীরা ৷

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ক্যাম্পাসে, ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড আবার শুরু করার প্রচেষ্টার প্রতিবাদে,শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকল শিক্ষা কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

গত ২০১৯ সালে, প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে বুয়েট ক্যাম্পাসে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত নির্যাতনের ঘটনায় ছাত্রলীগের বেশ কিছু নেতাকর্মী। এর পর থেকে ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক দলের অঙ্গ বা সহযোগী ছাত্রসংগঠনের রাজনীতি বর্জন করেশিক্ষার্থীরা।

এরপর থেকে ছাত্রলীগ বিক্ষিপ্তভাবে ক্যাম্পাসে রাজনীতি; বিশেষ করে রাজনৈতিক কর্মসূচি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।

এই চেষ্টা প্রতিবারই শিক্ষার্থীদের রাজনীতি বিরোধী সংগঠনের প্রতিরোধের মুখে পড়েছে। সেই ধারাবাহিকতায়, সর্বশেষ ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ডাক দেয়া হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার(২৮ মার্চ) বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনসহ কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীরা।

শিক্ষার্থীরা জানান, এসময় উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ইমতিয়াজ রহিম রাব্বি এবং তাদের প্রবেশের ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করেন তিনি।

শিক্ষার্থীরা আরো জানান যে ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটির কয়েকজন নেতাকর্মী ছাত্রলীগ সভাপতিকে ফুলের তোড়া উপহার দেন।

বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি ফিরিয়ে আনার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে ক্যাম্পাসে নিজেদের উপস্থিতি জানান দেয়ার লক্ষ্যে এই প্রবেশ চেষ্টা বলে উল্লেখ করছেন বুয়েটের অনেক শিক্ষার্থী।

নিরাপদ ক্যাম্পাস ও বুয়েটের কোনো শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে দিনভর বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

শত শত শিক্ষার্থী শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকাল থেকে আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বিক্ষোভে যোগ দেয় এবং পরে বিকেলে একটি সংবাদ সম্মেলন করে তারা। সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বুয়েট ক্যাম্পাসকে ব্যবহার করার ষড়যন্ত্র চলছে। এর প্রতিবাদে আগামী ৩০ ও ৩১ মার্চের নির্ধারিত ক্লাস এবং পরীক্ষাসহ সকল একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করার ঘোষণা দেন তারা।

শিক্ষার্থীদের দাবির মধ্যে রয়েছে; বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম লঙ্ঘনের জন্য বুয়েটের যে কোনো ছাত্রকে হল ও বিভাগ থেকে সাময়িক বহিষ্কা করা; বিশেষ করে, ইমতিয়াজ রহিম রাব্বির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তারা।

এছাড়া, আন্দোলনকারীদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা, এ ঘটনায় বুয়েট প্রশাসনের অবস্থান পরিষ্কার করা, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার নিশ্চয়তাসহ লিখিত আশ্বাস দাবি করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। আর, যে কোনো ধরনের হয়রানি থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত করার দাবি জানান তারা।

দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে, ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালকের পদত্যাগ দাবি করেন শিক্ষার্থীরা।