চাঁদের মাটিতে প্রথমবারের মতো চারাগাছ জন্মানোতে সফল হল বিজ্ঞানীরা

চাঁদের মাটিতে গাছ জন্মাতে সফল হল পৃথিবীবাসী

মানুষ চাঁদে বসতি গড়ার স্বপ্ন দেখেছে বহুকাল আগেই। চাঁদ নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছিলেন বিশ্বের সব খ্যাতনামা বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি প্রথমবারের মতো চন্দ্রের মাটিতে গাছপালা জন্মাতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা।

চন্দ্র জয়ের অর্ধশতাব্দী পর চাঁদের মাটিতে গাছ জন্মাতে সফল হল পৃথিবীবাসী। অর্ধশত বছর আগে অ্যাপোলো অভিযানের সময়ে চাঁদ আনা রিগোলিথ নামের চাঁদের মাটির নমুনা পরীক্ষাগারে ব্যবহার না-করে রাখা হয়েছিল ভবিষ্যতের জন্য। বিজ্ঞানের আরও উন্নতির পর পরীক্ষা চালানোর উদ্দ্যেশ্যে রাখা সেই মাটিতেই এবার জন্ম নিল সবুজ প্রাণ।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৬৯-১৯৭২ সালের এপোলো মিশনের সময়কার সংগৃহীত চাঁদের ধূলিকণার ছোট নমুনাগুলিতে এক ধরণের ক্রেস জন্মানোর জন্য ব্যবহার করেছিলেন গবেষকরা। সাইকে অবাক করে দিয়ে রোপণের দুই দিন পরই সেখানে বীজ অঙ্কুরিত হয়।

চাঁদের মাটি নিয়ে গবেষণার ফলাফল পত্রের সহ-লেখক ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনা-লিসা পল বলেছেন, আমি আপনাকে বলতে পারব না যে আমরা কতটা বিস্মিত হয়েছিলাম। প্রত্যেক উদ্ভিদ চন্দ্রের নমুনায় হোক বা নিয়ন্ত্রণে হোক—প্রায় ছয় দিন পর্যন্ত একই দেখাচ্ছে।

কিন্তু এর পরই এই নিয়ে মতভেদ দেখা দেয়। চাঁদের মাটিতে জন্মানো গাছগুলির বিকাশ ধীরে ধীরে হয় এবং শেষ পর্যন্ত স্থবির হয়ে পড়ে। তবে জড়িতরা বলছেন এটি একটি যুগান্তকারী সফলতা এবং এর ওপর পার্থিব প্রভাব রয়েছে৷

নাসার প্রধান বিল নেলসন বলেন, এই গবেষণাটি নাসার দীর্ঘমেয়াদী মানব অন্বেষণ লক্ষ্যগুলির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আমাদের ভবিষ্যতের মহাকাশচারীদের বসবাস এবং গভীর মহাকাশে কাজ করার সুবিধার্থে খাদ্য উত্স বিকাশের জন্য চাঁদ এবং মঙ্গলে পাওয়া সংস্থানগুলি ব্যবহার করতে হবে।

এই মৌলিক উদ্ভিদ বৃদ্ধির গবেষণাটি কৃষি উদ্ভাবনগুলিকে আনলক করার জন্য নাসা কীভাবে কাজ করছে এটি তার একটি মূল উদাহরণ। এর মাধ্যমে পৃথিবীতে প্রতিকূল পরিবেশেও গাছপালা কীভাবে টিকে থাকতে পারে সে সম্পর্কে আমরা ধারণা পেতে পারি।

তবে পরীক্ষার কাজে ব্যবহৃত চাঁদের মাটির স্বল্পতা গবেষকদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। নাসার মহাকাশচারীরা ১৯৬৯ সাল থেকে তিন বছরের সময়কালে চন্দ্র পৃষ্ঠ থেকে ৩৮২ কেজি ওজনের চন্দ্রের শিলা, মূল নমুনা, নুড়ি, বালি এবং ধূলিকণা সংগ্রহ করে নিয়ে আসে।

ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দলকে এই নমুনাগুলি থেকে পরীক্ষার জন্য গাছ প্রতি মাত্র ১ গ্রাম পরিমাণের মাটি দেওয়া হয়েছিল। এটিও কয়েক দশক ধরে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

১৯৭২ সালের পর প্রথমবারের মতো চন্দ্রাভিযান করতে ২০২৫ সালের জন্য নির্ধারিত একটি মিশনের পরিকল্পনা করছে নাসা।