লাইফস্টাইল ডেস্কঃ
সাধারণ মানুষ হন বা তারকা, ওজন কমাতে পরিশ্রমের খামতি রাখেন না কেউই। নিয়মিত শরীরচর্চার পাশাপাশি খাদ্যতালিকা থেকেও বাদ পড়ে অনেক কিছু।
অনেকের ধারণা যে কম খেলে বোধহয় দ্রুত ওজন কমানো সম্ভব। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে পুষ্টিবিদরা বলেছেন যে, ওজন কমাতে গিয়ে শরীরে পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাব ঘটলে হিতে বিপরীত হতে পারে। তাই এমন কিছু খাবার খেতে হবে যেগুলি ওজনও নিয়ন্ত্রণ রাখবে এবং শরীর সুস্থ রাখতেও সাহায্য করবে। সেগুলি কী?
ওমেগা-থ্রি সমৃদ্ধ খাবারঃ পেটের অতিরিক্ত মেদ ও চর্বি কমাতে ওমেগা-থ্রি জাতীয় খাবার বেশ উপকারী। সামুদ্রিক মাছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-থ্রি পাওয়া যায়। এ ছাড়াও আখরোট, চিয়া সিডস্, সোয়াবিন, সোয়াবিন তেল ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-থ্রি পাওয়া যায়।
ডার্ক চকলেট: ‘লুইজিয়ানা স্টেট ইউনিভার্সিটি’র করা এক গবেষণার ফলাফলের ভিত্তিতে ‘ইটদিস নট দ্যাট ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, চকলেট শরীরের অন্ত্রে-স্বাস্থ্যকর পলিফেনলিক যৌগ উৎপাদন বাড়িয়ে তুলতে পারে, যার মধ্যে একটি ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে যা প্রদাহের সঙ্গে যুক্ত জিনকে বন্ধ করে দেয় এবং শরীরের জ্বালানী হিসাবে চর্বি পোড়াতে সাহায্য করে।
লেবুর পানি: দেহের বিপাক বাড়াতে পানি সহায়তা করে। এর সঙ্গে লেবু যোগ করা দেহে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যোগায়।
চীনের সাউথওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘কলেজ অফ হর্টিকালচার অ্যান্ড ল্যান্ডস্কেপ আর্কিটেকচার’য়ের করা গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিপাক প্রক্রিয়ার গোলমাল সারাতে সাহায্য করে, ফলে চর্বি পোড়ানোর পরিমাণও বাড়ে।
পেয়ারা: পেয়ারা ভিটামিন সি সমৃদ্ধ। তবে এক কাপ পেয়ারায় চার গ্রাম তৃপ্তিকারী প্রোটিন থাকে। তাই ওজন কমাতে চাইলে খাবার তালিকায় পেয়ারা রাখা যায়।
সরিষা: ওজন কমাতে সরিষা উপকারী। ‘ইংল্যান্ড’স অক্সফোর্ড পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট’য়ের বিজ্ঞানীরা দেখেছেন যে, এক চা-চামচ সরিষা খাওয়া ঘন্টায় ২৫ শতাংশ পর্যন্ত বিপাক বাড়ায় যা ওজন কমাতে সহায়ক।
চকলেট দুধ: কম-চর্বি-জাতীয় চকলেট দুধের প্রতি এক কাপে আট গ্রাম প্রোটিন থাকে যা শরীরচর্চার আগ খাওয়ার জন্য উপযোগী। শরীরচর্চার সময় পেশি চর্বির চেয়ে বেশি ক্যালরি পোড়ায়। তবে চকলেট দুধ নির্বাচন করার সময় তাতে যেন চিনির পরিমাণ কম থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
কফি: কালো কফি বিপাক বাড়াতে সহায়তা করে, এতে বাড়তি ক্রিম বা কৃত্রিম মিষ্টি যোগ করা হলে ফলাফল ভিন্ন হয়।
বাদামের বাটার: বা পিনাট বাটার পেটের মেদ কমাতে উপকারী। কেননা এটা ‘মনোস্যাচুরেইডেটেড ফ্যাট’ ও প্রোটিন সমৃদ্ধ।
পনির: পনিরে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে। দুধের তৈরি খাবার দেহের ওজন কমাতে সহায়ক বলে জানা যায় ‘ইউনিভার্সিটি অফ কলোরাডো হেল্থ সায়েন্স সেন্টার’য়ের ‘সেন্টার ফর হিউম্যান নিউট্রিশন’য়ের করা গবেষণা থেকে।
‘জার্নাল অফ দ্যা আমেরেকিন হার্ট অ্যাসোসিয়েশন’ জার্নালে প্রকাশিত ‘দি পেনসিলভানিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি’র করা গবেষণা থেকে জানা যায়, প্রতিদিন ১.৫ আউন্স কাঠ বাদাম খাওয়া পেট ও পায়ের মেদ কমাতে সহায়তা করে।
কাঁচা কলা: অল্প কাঁচা কলা ‘রেজিস্ট্যান্ট স্টার্চ’ সমৃদ্ধ যা হজমে সহায়তা করে। এটা সুস্থ অন্ত্রের ব্যাক্টেরিয়া তৈরি করতে সাহায্য করে, যা অনেকক্ষণ পেট ভরা রাখে। এতে রয়েছে ভিটামিন বি-সিক্স যা শক্তি যোগায়।
লাল আপেল: এই ফলে রয়েছে দ্রবণীয় আঁশ যা পেটের মেদ কমাতে সাহায্য করে। যুক্তরাষ্ট্রের ‘ওয়েক ফরেস্ট ব্যাপটিস্ট মেডিকেল সেন্টার’য়ের গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি ১০ গ্রাম দ্রবণীয় আঁশ যারা গ্রহণ করে তাদের পাঁচ বছরে ৩.৭ শতাংশ চর্বি কমাতে সহায়তা করে।
বাঁধাকপি: বাধাকপি যে আঁশে পরিপূর্ণ সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। পুষ্টিবিজ্ঞানের আরও তথ্যানুসারে এই সবজি কোলেস্টেরলের মাত্রাও কমাতে পারে।খাওয়ার পর হজমের জন্য পিত্তথলি থেকে পাচক রস বের হয়। আর এই রসকে চর্বি গ্রহণে বাধা দিতে পারে বাঁধাকপি।
লাল মরিচ: ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ড সমৃদ্ধ যা মানসিক চাপ সৃষ্টিকারী হরমোনের মাত্রা কমায়। বেশি চাপে থাকলে কর্টিসলের মাত্রা বাড়ে যা পেটের চর্বি জমাট বাঁধায়।লাল মরিচ খাওয়া এই সমস্যা সমাধানে সহায়তা করে।
ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারঃ বিপাকক্রিয়ায় ব্যপক ভাবে সাহায্য করে। হজমশক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি ফাইবার ওজন কমাতে, কোলেস্টেরল ও উচ্চ রক্তচাপের মাত্র কমাতেও সহায়ক। বিনস্, বিভিন্ন শস্য, ব্রাউন রাইস, বেরি জাতীয় ফল, বাদাম ইত্যাদি খাবারে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার থাকে।
আরও পড়ুনঃ যেভাবে চুরি হয় ফোনের পাসওয়ার্ড।