জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পর থেকে পরিবহন শ্রমিকরা যাত্রীদের জিম্মি করে বাড়তি ভাড়া আদায় করছে। এ নিয়ে প্রতিদিনই শ্রমিকদের সঙ্গে যাত্রীদের বাগবিতণ্ডা চলছে। ভাড়া নিয়ে বাগবিতণ্ডার জেরে রাজধানীর মিরপুরে চালকদের একটি অংশ বাস চালানো বন্ধ করে দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) দুপুর দুইটা থেকে মিরপুর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন রোডের বাস বন্ধ করে দেয় বাস চালকরা। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। মিরপুর-১২, মিরপুর-১০, মিরপুর-১ নম্বরসহ পুরো মিরপুর এলাকায় অধিকাংশ বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
বাসচালকরা সাংবাদিকদের জানান, দুপুর ১২টার দিকে রামপুরায় অছিম পরিবহনের কয়েকজন যাত্রী ও বাসের কর্মচারীদের সাথে মারপিট হয়। এর আগে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীর সাথেও একই ধরনের ঘটনা ঘটে। এছাড়া মিরপুর রোডের বেশ কিছু বাসের কর্মচারীদের সাথে অফিসগামী যাত্রীদের বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনার জেরে দুপুর থেকে বাস বন্ধ করে দেয় চালকরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মিরপুর থেকে আবদুল্লাহপুরগামী বাসের সকল যাত্রীদের কালশী মোড়ে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়া হচ্ছে এবং গাড়িগুলো সেখানে থামিয়ে দেয়া হচ্ছে। এতে শত শত যাত্রী দুর্ভোগে পড়েন। পরে হেঁটে ও রিকশায় গন্তব্যের দিকে যেতে দেখা গেছে যাত্রীদের।
মিরপুর-১২ নম্বরে গুলিস্তান যেতে বাসের অপেক্ষায় ছিলেন ফরিদ মিয়া। বাসের জন্য অপেক্ষা করছি এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে। সারি সারি বাস আছে কিন্তু সেগুলো বন্ধ।
কয়েকজন যাত্রী জানান, সরকার ভাড়া নির্ধারণ করে দেয়ার পরও হেলপাররা তাদের মনগড়া ভাড়া আদায় করছে। আর তা নিয়ে অধিকাংশ যাত্রীর সাথেই তাদের কথা কাটাকাটি হয়।
এ বিষয়ে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেন, ভাড়া নিয়ে গণ্ডগোলের জেরে চালকদের একটি অংশ বাস চালানো বন্ধ রেখেছেন। আমরা সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি। বাস চলাচল দ্রুত সময়ের মধ্যে শুরু হবে।
যাত্রীদের ভোগান্তির কথা ভেবে গত রোববার (১৪ নভেম্বর) থেকে রাজধানীতে সব ধরনের সিটিং সার্ভিস বন্ধ করে দেয়া হয়।
এর আগে ১০ নভেম্বর দুপুরে রাজধানীর কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউয়ে সংগঠনটির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সিটিং সার্ভিস বন্ধের ঘোষণা দেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ। তখন তিনি বলেছিলেন, সিটিং সার্ভিসে কোনো নিয়মনীতি নেই। বাসগুলো নিজের মতো করে যাত্রী পরিবহন করে। এতে ভোগান্তি হয় যাত্রীদের। তাই ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় সিটিং সার্ভিস এবং গেট লক সার্ভিস থাকবে না।