বাংলাদেশে তেমন খনিজ সম্পদ নেই। বাংলাদেশের জনগণই এ দেশের সবচেয়ে বড় সম্পদ। বিপুল জনসংখ্যাকে জনসম্পদে রুপান্তরিত করতে কারিগরি শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। কারিগরি শিক্ষার ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন দরকার। তাই মাদ্রাসায় কারিগরি শিক্ষার উপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে।
কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এপিওভুক্তির প্রজ্ঞাপন জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ বিভাগ। এতে চূড়ান্তভাবে সাতটি স্তরের মোট ৯৮২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্তির আওতায় আনা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ মিজানুর রহমান ভূইয়া স্বাক্ষরিত আলাদা আলাদা প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। বর্তমান সরকারের এমন উদ্যাগকে সাধুবাদ জানাই।
সম্প্রতি কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা- এসডিজি অর্জনে করণীয় শীর্ষক ভার্স্যুয়াল সেমিনারের শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, নবম-দশম শ্রেনিতে অন্তত দুটি ট্রেড বাধ্যতামূলক করবার ব্যবস্থা নিয়েছি। করোনার পরিস্থিতি দীর্ঘস্থায়ী না হলে ২০২২ সালে চালু করতে পারব। এতে আমাদের কারিগরি শিক্ষার হার আরো বৃদ্ধি পাবে। আমাদের প্রতিটি উপজেলায় একটি করে কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হবে। এগুলো হবে অত্যন্ত আধুনিক মানের। আবার সাধারণ শিক্ষা ও মাদ্রাসা শিক্ষাতেও আমরা কারিগরি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করে তুলছি।
মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের কর্মমূখী শিক্ষা, বাস্তবমূখী শিক্ষার ওপর জোর দিতে হবে। পরিবর্তিত পরিস্থিতি গ্রহণের মানসিকতা ও অভিযোজনের ইচ্ছা থাকতে হবে। সেজন্য মনের দরজা জানালাটাকে খোলা রাখতে হবে। সময়ের সঙ্গে নিজেকে উপযোগী করে নেওয়া এবং মনে রাখতে হবে কোন কাজই ছোট নয়।
‘কারিগরি শিক্ষাগ্রহণের পর কোন শিক্ষার্থী বেকার থাকছে না। তাদের কর্মসংস্থান হচ্ছে। বরং যারা অন্যান্য শিক্ষায় আছে তারা সনদধারী হয়েও কর্মসংস্থান হচ্ছে না। আমাদের এদিকেও মনোযোগ দিতে হবে- সকলকে চাকরি খুঁজলে হবে না। উদ্যোক্তা হতে হবে। অনেককেই নিজের কর্মসংস্থান নিজেকেই সৃষ্টি করতে হবে। শিক্ষার্থীদেরকে হাতে-কলমে দক্ষ হয়ে গড়ে উঠতে হবে। আগামী দিনে এর বিকল্প কোন পথ নেই। কাজেই সেই মনোভাবটিও আমাদের গড়তে হবে।
‘যদি শিক্ষার মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থীর অর্থনৈতিক সক্ষমতা বাড়ে, সামাজিক দায়বদ্ধতা বাড়ে এবং নৈতিকভাবে আলোকিত হয় তবে সে ধরনের শিক্ষাকেই আমরা মানসম্মত শিক্ষা বলতে পারি। কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায় মূল বিষয় হলো কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে ব্যক্তির ও জাতীয় উন্নয়ন। তাই কর্মমুখী শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য সকলকে কাজ করতে হবে।