নারিকেলের আঁশে টমেটো-স্ট্রবেরি চাষ

টমেটো কিংবা স্ট্রবেরি চাষে লাগবে না মাটি। নারিকেলের আঁশে চাষ করা যাবে সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এসব ফল। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ইতোমধ্যে এ পদ্ধতিতে সফলভাবে টমেটো-স্ট্রবেরি চাষ শুরু করেছে।
এ পদ্ধতিতে মাটি ছাড়াই চারা নারিকেলের আঁশে রোপণ করা হয়। গাছের অত্যাবশ্যকীয় খাদ্য উপাদান যথাযথ মাত্রায় পানিতে মিশিয়ে একটি ট্যাংকে নেওয়া হয়। পরে পাম্পের সাহায্যে পাইপের মাধ্যমে গাছের গোড়ায় এসব উপাদান পৌঁছে দেওয়া হয়।
বিষয়টির আরও বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়ে ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা গোলাম আজম বাংলানিউজকে জানান, প্রথমে কোকোকয়ার বা কোকোডাস্ট (নারিকেলের আঁশ) একটি ট্রেতে নিই আমরা। এরপর কোকোকয়ার বা কোকোডাস্টে টমেটো কিংবা স্ট্রবেরির চারা রোপণ করা হয়।
তিনি বলেন, কোকোকয়ার বা কোকোডাস্টে মাটির পুষ্টিগুণ থাকে না। এ কারণে আলাদা একটি ট্যাংকে মাটির পুষ্টি গুণসমৃদ্ধ উপাদান পানিতে মেশানো হয়। পরে সেখান থেকে পাইপের মাধ্যমে টমেটো কিংবা স্ট্রবেরির গোড়ায় ঢালা হয়। চারাগুলো পুষ্টি গুণসমৃদ্ধ উপাদান পেয়ে বড় হয়ে উঠে।
আমরা প্রতিদিন ৩০ সেকেন্ড করে পানিতে মেশানো মাটির পুষ্টি গুণসমৃদ্ধ উপাদান গাছের গোড়ায় দিতে থাকি। পরে দুইদিন পরপর দেওয়া শুরু করি। এসব উপাদানের কারণে মাটি ছাড়াই ২৬ নভেম্বর রোপণ করা স্ট্রবেরি চারার স্ট্রবেরি হারভেস্ট (কাটার উপযোগী) কোয়ালিটিতে রূপান্তরিত হয়েছে। টমেটোও হওয়ার পথে।’
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এ এস এম হারুনুর রশীদ বাংলানিউজকে বলেন, হাইড্রোপনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে হচ্ছে। ব্যয়বহুল হলেও এটি সফল পদ্ধতি। তবে কাঠামোতে সূর্যের আলোর ব্যবস্থা এবং পলিথিন দিয়ে ঘেরা থাকতে হয়। ফলে পোকামাকড়ের সংক্রমণ থেকেও রক্ষা করা যায়।
তিনি বলেন, ‘নগরায়ণের কারণে ক্রমেই জমি কমছে। তাই শহরে বাড়ির ছাদসহ খোলা জায়গায় এ পদ্ধতি অনুসরণ করা যায়। বিশেষ করে শহরের আধুনিক জীবনযাপনকারীদের জন্য এটি অনুকূল। তবে মাটির উপাদান ক্রয় করা, পাম্প কেনা, লোহার কাঠামো তৈরি এবং অন্যান্য খাতে কিছু ব্যয় হলেও শহরের বাসিন্দাদের জন্য এটি উপযোগী।
‘ইতোমধ্যে অনেক বাগান মালিক আমাদের কাছে এসে এই পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। কেউ কেউ শুরু করেছেন। আমরা তাদের টেকনিক্যাল সাপোর্ট দিচ্ছি’ যোগ করেন তিনি।