শবে বরাতে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের ঘরে বসে নামাজ পড়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সবাই দোয়া করবেন। এবারের শবে বরাতে আল্লাহ যেন আমরা করোনা থেকে মুক্তি পাই।… আল্লাহ বাংলাদেশকে রক্ষা করে।’ মঙ্গলবার সকালে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে গণভবন থেকে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা চট্টগ্রামবাসীর প্রতি এ আহ্বান জানান।
ভিডিও কনফারেন্সে চট্টগ্রামবাসীর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা জানেন যে- মক্কা শরীফ, মদিনা শরীফ এখন বন্ধ। সেখানে কারফিউ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। মক্কা শরীফ, মদিনা শরীফেই যখন এ অবস্থা সেখানে মসজিদে গিয়ে অনেক লোক একসঙ্গে জমায়েত হওয়া- এটাতে কিন্তু সংক্রমণ হওয়ার একটা ভয় থাকে।’
‘সামনে শবে বরাত। সবাই যাতে ঘরে বসে ইবাদত করে। মসজিদে ভিড় না করে। আল্লাহকে যেকোনো জায়গা থেকেই ডাকা যায়। সবাই আল্লাহকে ডাকুন। এবারের শবে বরাতে আল্লাহ যেন লেখেন যে, করোনা থেকে মুক্তি পাই। সবাই সে দোয়াটা চাইবেন। সমগ্র বাংলাদেশের মানুষের কাছে আমি এ আহ্বান জানাই। আল্লাহ অন্তত বাংলাদেশটা যেন রক্ষা করে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রামে ১৬২ জনের টেস্ট করা হয়েছে। ২ জনের করোনা ভাইরাস পাওয়া গেছে। আর যাতে কারও এটা না হয়- সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে। আমি অনুরোধ করবো চট্টগ্রামবাসীকে- এখানে প্রবাসী যেহেতু একটু বেশি, তারা যেন আত্মীয় স্বজনদের বলে দেয় এখন না আসার জন্য।
‘বাইরে থেকে যারাই আসে, এসেছে- তাদের যেন ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টিনে রাখার পর আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে মিশতে দেওয়া হয়। বিষয়টা বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে।’ যোগ করেন তিনি।
ভিডিও কনফারেন্সে চট্টগ্রামের সার্বিক অবস্থা প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজে (বিআইটিআইডি) এ পর্যন্ত ১৬২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ২ জনের মধ্যে করোনা ভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে। তারা চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
জেলা প্রশাসক জানান, আপনার দেয়া ৩১টি নির্দেশনা চট্টগ্রামে যথাযথভাবে পালন করা হচ্ছে। আপনি বলেছেন- একজন লোকও ক্ষুধার্ত থাকবে না। আমরা সে লক্ষ্যে এ পর্যন্ত ৭২ হাজার ৪৮৭টি পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা প্রদান করেছি। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি জানান, সার্বিক অবস্থা এবং ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম মনিটরিং করার জন্য চট্টগ্রামে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সেখানে আসা ফোন কলের সূত্র ধরে প্রতিদিন ১৫০-২০০ মধ্যবিত্ত পরিবারে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। তাদের পরিচয়ও গোপন রাখা হচ্ছে।