বাংলাদেশে ৭ই জানুয়ারির নির্বাচন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কি ছিল?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখনও নিবিড়ভাবে বাংলাদেশের নির্বাচন এবং নির্বাচনের পর সম্ভাব্য পরিণতি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহের কমতি হয়নি। সেই লক্ষ্যে দেশটির দুজন নির্বাচন পর্যবেক্ষক বাংলাদেশে অবস্থান করছে।

  • Save

নির্বাচন বিশ্লেষকরা বলছেন যে, অন্য পর্যবেক্ষকদের মতো যুক্তরাষ্ট্র শুধু কেন্দ্রে ভোট দেখেই দায় সারবে না। আগামী সাতই জানুয়ারির ভোটের আগে পরের  ত্রুটিগুলো মূল্যায়ন করতেই পাঠানো হয়েছে ছোট কারিগরী মূল্যায়ন দলটি।

আগামীতে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে এগিয়ে নিতেই যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনের সার্বিক পরিবেশকে এতোটা গুরুত্ব দিচ্ছে।

নির্বাচন কমিশন বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইন্সটিটিউট (IRI) ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইন্সটিটিউট (NDI) আগামী নির্বাচনের সব কিছুই পর্যবেক্ষণ করবে।

মি. দেবনাথ জানান শুধু রাজনৈতিক সহিংসতা না, ভোটের আগে পরের সব পর্যবেক্ষণ তাদের রিপোর্টে থাকবে।এই দুটি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের নির্বাচনের সকল বিষয় পর্যবেক্ষণ করবে।

  • Save

বিজ্ঞপ্তিতে IRI যা বলছে

শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের আইআরআই তাদের ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে জন্য আইআরআই ও এনডিআই’র পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে পৌঁছেছে।

এই প্রতিনিধি দলটি বাংলাদেশে ছয় থেকে আট সপ্তাহ অবস্থান করবে। অবস্থানকালে নির্বাচন পূর্ববর্তী, নির্বাচনের সময় ও নির্বাচন পরবর্তী সহিংস পরিস্থিতির ওপর নজর রাখবে এবং সেগুলোর মূল্যায়ন করবে।

আরও বলা হয়, এই পর্যবেক্ষক দল বিভিন্ন ধরনের নির্বাচনী সহিংসতার বিষয়ভিত্তিক বিশ্লেষণ করবেন।

  • Save
এছাড়া ভবিষ্যৎ নির্বাচনে যাতে সহিংসতা কমানো হয়, সেটার গঠনমূলক সুপারিশসহ একটি প্রতিবেদন ওই কারিগরি দল দেবে বলেও জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

নির্বাচন বিশ্লেষক ড. আব্দুল আলীম বিবিসি বাংলাকে বলেন, “যখন কোন বিদেশি পর্যবেক্ষক দল ভোট পর্যবেক্ষণে আসেন তখন তারা বড় কোন টিম পাঠান। তারা নির্বাচনের দিন সারাদেশের ভোটগ্রহণের সব চিত্র পর্যবেক্ষণ করেন”।কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের এই দল শুধু ভোটের দিনের ভোটের চিত্র দেখতে আসছে না বলেও মনে করেন মি. আলীম।

যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহের কারণ কী?

‌বাংলাদেশে ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের দুটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেও সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তাগিদ ছিল । তবে এই দুটি নির্বাচন নানা প্রশ্নের জন্ম দিলেও ভোটের পর এ নিয়ে খুব একটা তৎপরতা দেখা যায়নি ।তবে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে দেশ ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান স্পষ্ট হয় । তখন মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে বাংলাদেশের   ছয়জন কর্মকর্তার ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয় ওয়াশিংটন।

  • Save

যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপের পর বাংলাদেশে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও গুমের ঘটনা অনেকটাই কমে যায়।

পরবর্তীতে নির্বাচনকে মাথায় রেখে চলতি বছরের মে মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসা নীতির কথা জানায়। যেখানে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

নির্বাচন বিশ্লেষক  বলছেন, “বাংলাদেশে নতুন করে একটা সুষ্ঠু ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে এগিয়ে নেয়ার একটা সুযোগ ছিলো। হয়তো সেটি নিশ্চিত হচ্ছে না। সে কারণে এটির ওপর যুক্তরাষ্ট্র বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে”।

 মুক্তা আক্তার

ঢাকা নিউজ বিডি

৩১ ডিসেম্বর ২০২৩