আর্জেন্টিনার নায়ক হলেন এমিলিয়ানো মার্তিনেজ। পেনাল্টি শুটআউটে তাঁর তিনটি সেভই ফাইনালে তুলল আর্জেন্টিনাকে। নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা ১-১ সমতায় থাকার পর টাইব্রেকারে গড়ায় ম্যাচ। সেই পর্বে মার্তিনেজের বীরত্বে ফাইনালে উঠল আর্জেন্টিনা।
আর্জেন্টিনার হয়ে লিওনেল মেসির সহায়তায় প্রথমে গোল করেন লাওতারো মার্তিনেজ। দ্বিতীয়ার্ধে লুইস দিয়াস সমতায় ফেরান কলম্বিয়াকে। এরপর আর কোনো গোল না হলে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানেই তিন-তিনটি পেনাল্টি আটকে দলকে জয়ের আনন্দে ভাসান এমিলিয়ানো মার্তিনেজ।
ইকুয়েডরের বিপক্ষে আর্জেন্টিনার যে একাদশ খেলেছিল, এ ম্যাচেও তার ব্যতিক্রম হবে না—এমনটা শোনা গেলেও আসলে তা হয়নি। মাঝমাঠে লিয়ান্দ্রো পারেদেসের জায়গায় নামানো হয়েছিল এই কোপায় রক্ষণাত্মক মিডফিল্ডার হিসেবে নাম কুড়ানো গিদো রদ্রিগেজকে। তাঁর সঙ্গী হিসেবে ছিলেন রদ্রিগো দি পল ও জোভান্নি লো সেলসো। আক্রমণভাগে মেসির সঙ্গে ছিলেন লাওতারো মার্তিনেজ ও নিকোলাস গঞ্জালেস। ওদিকে রক্ষণভাগে ছিলেন নিকোলাস ওতামেন্দি, জার্মান পেৎসায়া, নাহুয়েল মলিনা ও নিকোলাস তালিয়াফিকো। গোলবারের নিচে এমিলিয়ানো মার্তিনেজ।
প্রথম থেকেই দুর্দান্ত খেলছিলেন মেসি। ম্যাচের শুরুতেই তিনজন কলম্বিয়ান তারকাকে ছিটকে লাওতারো মার্তিনেজকে একটা পাস দিলে ইন্টার মিলানের এই ফরোয়ার্ড গোল করতে ব্যর্থ হন। তবে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি আর্জেন্টিনাকে। জোভান্নি লো সেলসোর দুর্দান্ত এক পাস ধরে বক্সে থাকা লাওতারোর কাছে বল বাড়ান মেসি। ৭ মিনিটেই লাওতারোর দুর্দান্ত প্লেসিংয়ে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। এই অ্যাসিস্টের মাধ্যমে এ টুর্নামেন্টে চার গোল ও পাঁচ অ্যাসিস্ট হয়ে গেল মেসির। এ নিয়ে কোপায় আর্জেন্টিনার শেষ ১১ গোলের নয়টাতেই থাকল মেসির অবদান।
কলম্বিয়া প্রথম থেকে শরীরনির্ভর ফুটবল খেলছিল। বিশেষ করে মেসি, লাওতারো, দি পল ও লো সেলসোকে সুযোগ পেলেই বাজেভাবে ফাউল করছিলেন কলম্বিয়ান খেলোয়াড়েরা। দ্বিতীয়ার্ধে পেৎসায়ার বাজে ডিফেন্ডিংয়ের সুযোগ নিয়ে দলকে সমতায় ফেরান পোর্তোর উইঙ্গার লুইস দিয়াজ।
আর্জেন্টিনা যে সুযোগ পায়নি, তা নয়। মেসির একটা শট বারে লেগেছে, গোল করার আরও সুযোগ পেয়েছিলেন লাওতারো ও দি মারিয়া। লাভ হয়নি। ডি-বক্সে ওতামেন্দির শার্ট ধরে টেনে ফেলে দেওয়ার পরও আর্জেন্টিনাকে পেনাল্টি দেননি রেফারি।
কলম্বিয়ার লক্ষ্য ছিল রক্ষণ, পরে সুযোগ পেলে প্রতি–আক্রমণে উঠে যাওয়া। সে কাজ করতে গিয়ে বেশ কয়েকবার আর্জেন্টিনার রক্ষণে কাঁপন ধরিয়েছে তারা। অমন একটা আক্রমণ আটকাতে গিয়ে হলুদ কার্ড দেখেছেন পেৎসায়া। শেষ ১০ মিনিটে মেসি দুটি ফ্রি-কিক পেলেও দলকে এগিয়ে দিতে পারেননি।
পরে পেনাল্টি শুটআউটে গল্পটা এমিলিয়ানো মার্তিনেজেরই। তিন-তিনটি পেনাল্টি সেভ করে দলকে তুলেছেন ফাইনালে। শুরুতে কলম্বিয়ার হয়ে কুয়াদ্রাদো ও আর্জেন্টিনার হয়ে মেসি গোল করেন। এরপরই মঞ্চে আবির্ভাব এমিলিয়ানো মার্তিনেজের।
একে একে আটকে দেন সেন্টারব্যাক দাভিনসন সানচেজ ও ইয়েরি মিনার দুই পেনাল্টি। ওদিকে আর্জেন্টিনার হয়ে পেনাল্টি মিস করেন দি পল। কিন্তু লাওতারো ও পারেদেস গোল করে দলকে চিন্তামুক্ত করেন। কলম্বিয়ার হয়ে মিগুয়েল বোরহা গোল করলেও এদউইন কার্দোনার শেষ পেনাল্টিটা আবার আটকে দেন মার্তিনেজ।