বৃহস্পতিবার দিন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৩০৪ কোটি টাকা , যা দুই কার্যদিবসের লেনদেন শেষে সোমবার ৪ লাখ ৫৮ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকায় নেমেছে।
অর্থাৎ দুই দিনে ডিএসইর ২০ হাজার ৯০৯ কোটি টাকা বা ৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ বাজার মূলধন হারিয়েছে।সোমবার পর্যন্ত দুদিনে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স যথাক্রমে ১৪৩ পয়েন্ট বা আড়াই শতাংশ এবং ১২৮ দশমিক ৩২ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৩৩ শতাংশ কমে ৫ হাজার ৩৭৬ দশমিক ৪৫ পয়েন্টে নেমেছে।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক পোর্টাল লংকাবাংলার হিসেবে, সোমবারের সূচক কমানোর পিছনে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখা তিনটি কোম্পানির প্রথমে রয়েছে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ, তারপরই বেক্সিমকোর ফার্মা ও বেক্সিমকোর অবদান। তার আগের দিনের পতনেও শেষের এই দুটি কোম্পানির বড় অবদান ছিল। এর মধ্যে রোববার বেক্সিমকো ও সোমবার বিএটিবিসির অবদান কাছাকাছি ১৯, শতাংশের বেশি ছিল।
চলতি সপ্তাহের প্রথম দুদিন টানা শেয়ারের মূল্য সূচকে বড় পতনের ফলে বাংলাদেশের প্রধান পুঁজিবাজার প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকার মূলধন হারিয়েছে। আগের দিনের ধারাবাহিকতায় সোমবারও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স প্রায় আড়াই শতাংশ সূচক হারায়, যার কুশীলব বড় মূলধনী কোম্পানিগুলো।
পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কিছু শেয়ারের দাম রাতারাতি বেড়ে গিয়েছিল। এর ফলে সূচক অনেক বেড়ে গিয়েছিল। সেই বেশি বেড়ে যাওয়া শেয়ারের দাম স্বাভাবিক হচ্ছে এখন।
গত বছরের ১৮ মার্চ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচক ছিল ৩ হাজার ৬০৪ পয়েন্ট। এর পর সূচক বাড়তে থাকে। চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি ডিএসই সূচক দাঁড়ায় ৫ হাজার ৯০৯ পয়েন্টে। ১০ মাসে সূচক বেড়েছিল ২ হাজার ৩০৫ পয়েন্ট বা প্রায় ৬৪ শতাংশ; কিছু কোম্পানির শেয়ারের দাম অনেক বেড়েছে।
পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত বছরের ১৮ মার্চ এশিয়া ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের শেয়ারের দাম ছিল ছিল ১৪ টাকা ৯০ পয়সা। চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি দাম হয়েছিল ১১৫ টাকা যা আগের তুলনায় ১০১ টাকা বা ৬৭৫ শতাংশ বেশি। গত বছরের ১৮ মার্চ বেক্সিমকোর শেয়ারের দাম ছিল ছিল ১১ টাকা ৬০ পয়সা। চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি দাম হয়েছিল ৮৭ টাকা, যা আগের তুলনায় ৭৬ টাকা বা ৬৫৩ শতাংশ বেশি।
জিল বাংলা সুগার মিলস লিমিটেডের দাম ছিল ২৭ টাকা ১০ পয়সা, চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি দাম হয়েছিল ১৫৭ টাকা। আগের তুলনায় ১৩০ টাকা বা ৪৮০ শতাংশ বেশি। প্রভাতী ইন্সুরেন্স ৩৪৩ শতাংশ, সিএপিএম আইবিবিএল ইসলামিক মিউচ্যুয়াল ফান্ড ৩২৩ শতাংশ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স ৩১৬ শতাংশ দর বৃদ্ধি দেখেছে এসময়। বিডি ফাইন্যান্স ৩১২ শতাংশ, এসপি সিরামিকস ৩০৬ শতাংশ, লংকা বাংলা ২৮৬ শতাংশ, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স ২৮০ শতাংশ, বেক্সিমকো ফার্মা ২৭৩ শতাংশ দর বৃদ্ধি দেখেছে।
১৪ জানুয়ারি থেকে সোমবার পর্যন্ত ডিএসইতে সূচক কমেছে ৫৩৩ পয়েন্ট বা ৯ শতাংশ। এই কমার পেছনে অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধি হওয়া কোম্পানিগুলোর অবদান আছে। কারণ এই শেয়ারগুলোর দাম অনেক কমেছে। ১৪ জানুয়ারি থেকে বুধবার পর্যন্ত এশিয়া ইন্স্যুরেন্সের দাম কমেছে ২৪ শতাংশ, বেক্সিমকোর ২১ শতাংশ, জিল বাংলার ১৩ শতাংশ, লংকা বাংলার কমেছে ২৫ শতাংশ ও বেক্সিমকো ফার্মার কমেছে ২৪ শতাংশ।
বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, বেক্সিমকো ও লংকাবাংলা বড় বাজার মূলধনের কোম্পানি হওয়ায় সূচকের উপর এর প্রভাব পড়েছে বেশি।
শেয়ার করুন