বাংলাদেশের আবহাওয়া ও প্রকৃতির কারণে করোনাভাইরাস খুব একটা ঘায়েল করতে পারবেনা বলে মতামত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। আক্রান্ত তিনজনের দুইজন ইতোমধ্যেই সুস্থ্যতার পথে। গরম পড়ে যাওয়ার কারণে এই ভাইরাস ব্যাপক ভাবে ছড়ানোর সম্ভাবনা না থাকলেও আসছে মৌসুমে ডেঙ্গুর প্রভাব নিয়ে আজ বুধবার এ শঙ্কা প্রকাশ করেছে আদালত।
করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া অবস্থায় ডেঙ্গুসহ অন্যান্য রোগ ছড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করবে। তাই ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনকে মশক নিধনে কার্যকর সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। সঙ্গে ধুলোবালি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দুই সিটি করপোরেশনের পদক্ষেপ জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে আদালত পর্যাপ্ত বাজেট থাকার পরও সঠিকভাবে কাজ হচ্ছেনা ও সিটি কর্পোরেশনকে সহায়তা করার ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের আচরণ দুঃখজনক বলেও মন্তব্য করেন হাইকোর্ট।
আগামী ২৯ মার্চের মধ্যে এ বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করার জন্যে বলা হয়েছে। এসব বিষয় সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
বায়ুদূষণ নিয়ে দায়ের করা এক রিটের শুনানিতে বুধবার (১১ মার্চ ) হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
ঢাকার বায়ুদূষণের মাত্রা পরিমাপ এবং দূষণ রোধের বিষয়ে আদালত বলেন, বায়ুদূষণ রোধে নেওয়া পদক্ষেপ আমাদের হতাশ করেছে। আমরা ক্ষুব্ধ। রিটের শুনানিতে আদালত আরও বলেন, মেট্রোরেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ যেসব এলাকায় চলছে, সেসব এলাকায় প্রচুর ধুলোবালি পরিবেশ দূষিত করছে।
ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা চেয়ে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে ২০১৯ সালের ২৭ জানুয়ারি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় একটি রিট করা হয়। বিশ্বে সবচেয়ে বায়ুদূষণের কবলে থাকা শহরগুলোর মধ্যে ঢাকা শহরের অবস্থান ১৭তম। আর রাজধানী শহরগুলোর তালিকায় ঢাকার অবস্থান দ্বিতীয়। এই শহরের বাতাসে ক্ষুদ্র বস্তু কণিকার (পার্টিকুলেট ম্যাটার বা পিএম ২.৫) পরিমাণ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বেধে দেওয়া মাত্রার চেয়ে প্রায় ১০ গুণ বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান এয়ারভিজ্যুয়ালের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। ‘বিশ্ব বাতাসের মান প্রতিবেদন ২০১৮’ শীর্ষক প্রতিবেদনে থাকা শহরগুলোর তালিকাটি এয়ারভিজ্যুয়ালের ওয়েবসাইটে ৫ মার্চ প্রকাশ করা হয়। বিশ্বের ৭৩টি দেশের বায়ুর মানের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রতি ঘনমিটার আয়তনে বাতাসে ক্ষুদ্র বস্তু কণিকার পরিমাণ বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।
বায়ু ও পানি দূষণের কারণে মশার উত্তম প্রজনন স্থান ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরগুলো। এমতাবস্থায় এখনই কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে ডেঙ্গু প্রতিরোধ কঠিন হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।