মানুষের মস্তিষ্ক সম্পর্কে অবাক করা কিছু তথ্য

ছবিঃ ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ

মানুষের মস্তিষ্ক নিয়ে আজ অব্দি কম গবেষণা হয়নি। সেসব গবেষণা থেকেই বেরিয়ে এসেছে অবাক করে দেয়া কিছু তথ্য। মানুষের মস্তিষ্ক সম্পর্কে অবাক করা কিছু তথ্য নিয়েই আজকের ডে নিউজের আয়োজন।

  • একটি সাধারণ মানবদেহের মস্তিষ্কের ওজন পুরো দেহের ওজনের প্রায় ২% হয়ে থাকে। কিন্তু দেহ যেই পরিমাণ অক্সিজেন বাইরে থেকে গ্রহণ করে, তার প্রায় ২০% শোষণ করে নেয় মস্তিষ্কই।
  • মস্তিষ্কের ৭৩% জায়গা জুড়ে আছে শুধুই পানি। কিন্তু মাত্র ২% পানিশূন্যতাই আপনার মনোযোগ ও স্মৃতিশক্তির উপর বিরূপ প্রভাব ফেলার জন্য যথেষ্ট।
  • এক বছর বয়স বাড়লে মানুষের মস্তিষ্ক যতটুকু সংকুচিত হয়, টানা ৯০ মিনিট ঘামলে ওই একই পরিমাণ সংকোচন ঘটে মস্তিষ্কে।
  • স্বাভাবিক অবস্থায় একটি মস্তিষ্কের ওজন ৩ পাউন্ড বা ১৪০০ গ্রামের কাছাকাছি হয়ে থাকে।
  • শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি, মানবদেহের সবচেয়ে চর্বিসমৃদ্ধ অঙ্গ হল মস্তিষ্ক।
  • মানুষের মস্তিষ্ক সেরেব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড নামক একটি তরলের উপর সদা ভাসমান।
  • মানবদেহে জমা থাকা মোট কোলেস্টেরলের ২৫% জমা থাকে মস্তিষ্কে। মস্তিষ্কের প্রতিটি কোষের জন্য কোলেস্টেরল একটি অত্যাবশ্যকীয় উপাদান। পর্যাপ্ত কোলেস্টেরল ছাড়া মস্তিকের কোষ মারা যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে।
  • সঠিক সংখ্যাটা এখনো জানা যায়নি, তবে ধারণা করা হয় আমাদের মস্তিষ্কে প্রায় ৮৬ বিলিয়ন কোষ (ব্রেইন সেল) আছে।
  • এক সেকেন্ডে একটি নিউরন প্রায় ১ হাজারের মত স্নায়বিক বার্তা পাঠাতে পারে শরীরের অন্যান্য অংশে।
  • মস্তিষ্কের সকল নিউরন একই রকমের নয়। একটি মস্তিষ্কেই প্রায় ১০ হাজার ভিন্ন ভিন্ন ধরনের নিউরনের উপস্থিতি দেখতে পাওয়া যায়।
  • Save
ছবিঃ ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ

 

  • মস্তিষ্কে অনবরত অক্সিজেনের সরবরাহ থাকতে হয়। পাঁচ মিনিটের জন্যও যদি মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়, এতে করে ব্রেইন সেল মারা যেতে পারে, আর ফলশ্রুতিতে ব্রেইন ড্যামেজ ও হয়ে যেতে পারে।
  • কখনো কি খেয়াল করে দেখেছেন শিশুদের মাথার আকৃতি প্রাপ্তবয়স্কদের থেকে বড় হয়ে থাকে? ক্রমবর্ধমান মস্তিষ্ককে জায়গা করে দেয়ার জন্যই শিশুদের মাথার আকৃতি বড় হয়ে থাকে।
  • ২৫ বছর বয়সের আগে মানুষের মস্তিস্ক পুরোপুরিভাবে বিকশিত হয় না। ২৫ বছরে পদার্পণ করার পর ওই মানুষের মস্তিষ্ককে বলা হয় সম্পূর্ণভাবে বিকশিত মস্তিষ্ক।
  • আপনার মস্তিষ্কে নিয়মিত ১২ থেকে ২৫ ওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়, যা দিয়ে একটি কম পাওয়ারের এলইডি বাতি জ্বালানো সম্ভব!
  • প্রতি মিনিটে ৭৫০-১০০০ মিলিলিটার রক্ত মস্তিষ্কের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এই পরিমাণ রক্ত দিয়ে একটি ওয়াইনের বোতল কিংবা এক লিটারের সোডার বোতল পূর্ণ করে ফেলা যাবে।
  • মস্তিষ্কের ভেতর দিয়ে রক্ত প্রবাহিত হওয়ার জন্য প্রায় ৪০০ মাইল সমপরিমাণ ধমনী রয়েছে!
  • আপনি মাত্র ১৩ মিলিসেকেন্ডের জন্য কোন একটি বস্তুর দিকে দৃষ্টি দিয়েছেন, এই ১৩ মিলিসেকেন্ডই আপনার মস্তিষ্কের জন্য যথেষ্ট সেই বস্তুটির একটি ইমেজ তৈরি করে ফেলার জন্য! একটি চোখের পলক ফেলতেও এর চেয়ে বেশি সময় লাগে।
  • একজন নারীর মস্তিকের চেয়ে একজন পুরুষের মস্তিষ্ক ১০% বড় হয়ে থাকে। তবে মস্তিষ্কের যে অংশটি স্মৃতিশক্তির সাথে জড়িত, হিপোক্যাম্পাস, সেটি আবার পুরুষের তুলনায় মহিলাদের বড় হয়ে থাকে।
  • আইনস্টাইনের মস্তিকের ওজন ছিল ২.৭১ পাউন্ড বা ১২৩০ গ্রাম, একটি স্বাভাবিক মস্তিষ্কের ওজনের চেয়ে প্রায় ১০% কম ও ছোট। তবে সাধারণ মস্তিষ্কের চেয়ে আইনস্টাইনের মস্তিষ্কে নিউরনের ঘনত্ব বেশি ছিল।
  • বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে দেখিয়েছেন, গত ১০ থেকে ২০ হাজার বছর সময়ের মধ্যে মানুষের মস্তিষ্কের আকৃতি একটি টেনিস বলের সমান হ্রাস পেয়েছে!
  • বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে একটি চমৎকার জিনিস আবিষ্কার করেছেন। মানুষের মস্তিষ্কের যে অংশটি স্মৃতিশক্তির সাথে জড়িত, সেই হিপোক্যাম্পাস নাকি অন্যদের তুলনায় লন্ডনের ক্যাবচালকদের মধ্যে একটু বড় থাকে! লন্ডনের ২৫ হাজার অলিগলিতে ক্যাব চালাতে হয় বলেই নাকি তাদের হিপোক্যাম্পাস বড় আকৃতির!
  • Save
ছবিঃ ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ
  • আগের রাতে খুব মদ্যপান করেছেন, পরদিন সকালে উঠে কিছুই মনে করতে পারছেন না। কি ভাবছেন, আগের রাতের সবকিছু আপনি ভুলে গেছেন? আজ্ঞে না, আপনি কিছুই ভোলেননি। ভুলবেন কিভাবে, আপনার স্মৃতিতে কিছু জমা হলে না ভুলবেন! মদ্যপানের সময় মস্তিষ্ক তার স্মৃতি তৈরির কাজ সাময়িকভাবে বন্ধ করে রাখে।
  • মানুষের মস্তিষ্ক কোন ব্যথা অনুভব করতে পারে না, কারণ মস্তিষ্কে ব্যাথা অনুভব করার মত কোন স্নায়ু নেই। এ কারণে রোগীকে সচেতন অবস্থায় রেখেও অনেক সময় ব্রেন সার্জারি করা হয়, এবং রোগী কোন ব্যাথাও অনুভব করেন না।
  • মানুষের মস্তিষ্কের তথ্য সংগ্রহ করে রাখার ক্ষমতাকে মোটামুটি আনলিমিটেডই বলা চলে। কম্পিউটারের র‍্যামের মত এর কোন নির্দিষ্ট সীমা নেই।