রাত ৮টার পর থেকে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয়েছে ধূলিঝড়। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয়েছে ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি। বিদ্যুৎ চমকানোর পাশাপাশি কোথাও কোথাও পড়ছে শিলা। এরপর কোথাও হালকা আবার কোথাও ভারী বৃষ্টির খবর পাওয়া গেছে। আস্তে আস্তে মুষলধারে বৃষ্টি বাড়তে শুরু করে, সঙ্গে শিলাবৃষ্টিও।
রবিবার (৫ মে) বিকাল ৪টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার জন্য আবহাওয়া অধিদফতরের এক সতর্ক বার্তায় বলা হয়েছিল, আগামী তিন দিন অর্থাৎ ৭২ ঘণ্টার মধ্যে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের ওপর দিয়ে বিচ্ছিন্নভাবে পশ্চিম, উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঝোড়ো হাওয়াসহ কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যেতে পারে। কালবৈশাখী ঝড়ের সঙ্গে বজ্রপাত ও বিচ্ছিন্নভাবে শিলাবৃষ্টিও হতে পারে।
স্থানীয়রা জানান, সন্ধ্যা ৬টার দিকে দোয়ারাবাজার উপজেলার আকাশ কালো করে আঘাত হানে কালবৈশাখী ঝড়। সঙ্গে শুরু হয় শিলাবৃষ্টি। মাত্র ১৫ মিনিটের ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে কাঁচা ঘরের ব্যাপক ক্ষতি হয়। উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের বাশতলা গ্রাম, চৌধুরী পাড়া, মৌলারপাড়, কলোনি, নতুন বাশতলা, ঝুমগাও, পেকপাড়া গ্রামের টিনের বাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ এবং ফসলের খেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
পাটুল গ্রামের কৃষক ফরিদুল ইসলাম, আকতার হোসেন জানান, শিলাবৃষ্টিতে তাদের পেয়াজ, রসুন, গম, পেয়াজ বীজ, আর ভুট্টার সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। কারো কারো ফসল ঘরে তোলাই যাবে না। এতো শিলা পড়েছে যে গাছের পাতা পর্যন্ত ঝড়ে গেছে, মাটিতে শিলার স্তূপ পড়ে আছে।
সিংড়া এলাকার স্থানীয়রা জানান, এ উপজেলার চৌগ্রাম, হুলহুলিয়া, ভাগনগরকান্দি,খরমকুড়ি, কলম, কালিনগর, দাজপুর, লালোর, ডাকমণ্ডপ, বারইহাটিসহ অন্তত ২০টি গ্রামে ব্যাপক শিলাবৃষ্টি হয়েছে। ঘরবাড়ি থেকে শুরু করে রবি ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম ভুইয়া বলেন, বাশতলা অঞ্চলে শিলাবৃষ্টিতে অসংখ্য টিনের তৈরি বাড়ির চাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই সব বাড়ির ভেতর থেকে এখন আকাশ দেখা যাচ্ছে। বাড়িগুলো একেবারেই বসবাসের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। শিলাবৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি অসুবিধায় পড়েছেন নিম্নআয়ের মানুষ।
সেই পূর্বাভাস অনুযায়ী ঢাকায় স্বস্তির বৃষ্টি শুরু হলো। সেই সঙ্গে কমে এসেছে তাপমাত্রাও। জানা যায়, ফার্মগেট, মতিঝিল, শান্তিনগর, ফকিরাপুল এলাকায় এখনও হচ্ছে ধূলিঝড়। আকাশে চমকাচ্ছে বিদ্যুৎ। অন্যদিকে খিলগাঁও, বসুন্ধরা, রামপুরায় হালকা বৃষ্টি হচ্ছে। মিরপুর, শেওড়াপাড়া, পীরেরবাগ, পল্লবীতে ঝড় এবং বৃষ্টি চলছে একইসঙ্গে। গেন্ডারিয়ায় বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। কলাবাগানে ঝড় হচ্ছে, ইস্কাটনে শিলা পড়ছে।
আজ ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৬.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৫.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
অন্যদিকে কাল সোমবার (৬ মে) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। আর এই সময়ে সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে।
Advertisement Febrics Veiw