হোম ধর্ম ও জীবন “তালবিনা” মাহে রমজানের সর্বোচ্চ পুষ্টি ও সওয়াব দিতে পারে এই খাবারটি।

“তালবিনা” মাহে রমজানের সর্বোচ্চ পুষ্টি ও সওয়াব দিতে পারে এই খাবারটি।

তালবিনা কি?

তালবিনা হচ্ছে যব বা বার্লি। দুধ, মধু ইত্যাদির সহযোগে তৈরি করা এক ধরনের জাউ। যব পিষে দুধে পাকিয়ে তাতে মধু মিশিয়ে এটা তৈরি করা হয়। ইবনে সিনা, তাঁর ১১ শতকের রচনা ‘কানুন ফিততিব’-এ জ্বরের নিরাময়ের জন্য যবের পানি, স্যুপ ও ঝোলের প্রভাবের কথা উল্লেখ করেছেন।

তালবিনা তৈরি ও খাওয়ার নিয়ম:

ঢেঁকি ছাঁটা যবের ছাতু/তালবিনা পাউডার যা তালবিনা তৈরির মূল উপাদান। তালবিনা পাউডারের সাথে খাঁটি দুধ ও মধু একত্রে গুলিয়ে তালবিনা তৈরি করা হয়। সাথে কলা, কাঠবাদাম, কাজুবাদাম, আম, খেজুর ইত্যাদি ফল মিক্সড করে এর স্বাদ এবং পুষ্টিগুণ যোগ করা যায়।আমাদের রাসুল (সা:) মিষ্টতা বাড়ানোর জন্য মধু ব্যবহার করতেন। এভাবে খেতেও অনেক সুস্বাদু হয়। কারো ডায়াবেটিসের সমস্যা থাকলে তিনি মধু বাদ দিয়ে খেতে পারেন।

তালবিনা হরলিক্স বা সেরেলাকের মতো গুলিয়ে বা ঘন করে চামচ দিয়ে খেতে পারেন। এটি দিনের যে কোন সময়ে ক্ষুধা লাগলে অথবা শরীরের ক্লান্তি দূর করতে ঝটপট তৈরি করে খেতে পারেন। তবে ডায়েট চার্টে যুক্ত করতে সকালে নাস্তা হিসেবে এবং রাতে খেতে পারেন।

তালবিনা একটি সুন্নতি খাবার:

আয়েশা (রা.) রোগীকে এবং কারো মৃত্যুজনিত শোকাহত ব্যক্তিকে তালবিনা খাওয়ানোর আদেশ করতেন। তিনি বলতেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, তালবিনা রোগীর কলিজা মজবুত করে এবং দুশ্চিন্তা দূর করে। (বুখারি: ৫৬৮৯, ৫৪১৭)
তালবিনার উপকারিতা সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) আরো বলেছেন, তালবিনা রুগ্ন ব্যক্তির হৃদয়ে প্রশান্তি আনে এবং শোক-দুঃখ দূর করে। (বুখারি : ৫৪৯৭, মুসলিম : ২২১৬)

তালবিনা হলো তরলজাতীয় খাদ্য, যা দুধ, যব বা বার্লি দ্বারা প্রস্তুত করা হয়।(তিরমিজি, হাদিস : ২০৩৯)

আধুনিক গবেষণা এবং নবী করিম (সা.)-এর হাদিস অনুযায়ী, যবের উপকারিতা অপরিসীম। পাকস্থলী ও অন্ত্রে আলসারের রোগীদের সকালের নাশতায় নবী করিম (সা.)-এর যুগে উন্নতমানের ব্যবস্থাপত্রস্বরূপ তালবিনা প্রদান করা হতো। পুরনো কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য যবের ছাতুতে সুফল পাওয়া যায়।

তালবিনা খাওয়ার উপকারিতা:

এতে উপস্থিত অ্যান্টি-এজিং উপাদান যা হরমোন তৈরিতে সহায়তা করে। এবং তালবিনায় বিদ্যমান ম্যাগনেসিয়াম যা রক্তের শর্করা এবং ইনসুলিনের মাত্রা কমাতে সহায়তা করে ফলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে। এছাড়াও এতে বিদ্যমান বিটা-গ্লুকানের পরিমাণ বেশি থাকে, যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।

  1. উচ্চ ফাইবারসমৃদ্ধ হওয়ায় পিত্তথলির পাথর রোধে ভূমিকা রাখে।
  2. এতে রয়েছে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস, যা অস্টিওপোরোসিস থেকে মুক্তি দেয়।
  3. পেটের জ্বালাপোড়া দূর করে হজমে সহায়তা করে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
  4. কিডনি রোগীদের জন্য উপকারী।
  5. দূর্বলতা দূর করে।
  6. রক্তে হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি কমায়।
  7. হৃদরোগে উপকারী।
  8. ক্যান্সারের জীবাণু মেরে ফেলে।
  9. উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ডায়াবেটিকের ঝুঁকি কমায়।
  10. ডায়াবেটিসজনিত দুর্বলতা দূর করে। কোলেস্টেরল কমায়
  11. জয়েন্টের ব্যথা উপশম করে।
  12. শারীরিক ক্লান্তি দূর করে এবং অলসতা দূর করে।
  13. পিঠের ব্যথা দূর করে।
  14. থাইরয়েড রোগীদের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
  15. মস্তিষ্ককে তীক্ষ্ণ করে।
  16. গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মহিলাদের জন্য উপকারী।
  17. শিশুদের পুষ্টির চাহিদা কভার করে। শিশুদের প্রয়োজনীয় আঁশ, আমিষ এবং খনিজ পদার্থ যোগান দেয়।
  18. মহিলাদের সর্বদা হিমশীতলতা এবং লিকারিস।
  19.  ক্ষুধা হ্রাস করে এবংওজন হ্রাসে সহায়তা করে। উল্লেখিত রোগ ছাড়াও আরো অনেক রোগে উপকারী