প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রীদের খরচ কমানোর নির্দেশনা দিয়েছেন

সরকারি খরচ কমাতে কম গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র ক্রয় এড়িয়ে চলুন: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বৈশ্বিক সংকটের এই সময়ে সরকারি ব্যয় কমাতে কম গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র ক্রয় এড়াতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আইটেম ক্রয়, যা অবিলম্বে প্রয়োজন নয়, তা এখন বন্ধ থাকবে।’

প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি মন্ত্রিসভার বৈঠকে সভাপতিত্বকালে এ নির্দেশনা দেন। বাংলাদেশ সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে মন্ত্রিসভার সদস্য ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বিমানের উড়োজাহাজের সংঘর্ষ, প্রকল্পের ব্যয় ও গাড়ির ব্যবহারসহ বেশ কিছু বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা সম্পর্কে সাংবাদিকদের অবহিত করেন।

তিনি বলেন, খরচ কমাতে প্রধানমন্ত্রী আজও সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন। এজন্য আমাদের প্রকল্পগুলোর ক্যাটাগরি করা হয়েছে- এ, বি, সি। ‘এ’ ক্যাটাগরির যেগুলো সেগুলো ইমিডিয়েটলি প্রয়োজন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় গুরুত্ব অনুযায়ী প্রকল্পগুলোকে ‘এ’, কোনগুলো ‘বি’ ও কোনগুলো ‘সি’ ক্যাটাগরিতে ফেলবে। ‘এ’ ক্যাটাগরির প্রকল্পের পুরো টাকা খরচ করা যাবে। ‘বি’ ক্যাটাগরির প্রকল্পগুলোতে ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত খরচ করা যাবে। আর ‘সি’ ক্যাটাগরির প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন স্থগিত থাকবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কেনাকাটাতে যথাসম্ভব যেগুলো ইমিডিয়েট, না কিনলে হবে না, সেই জাতীয় কেনাকাটা চলবে। যেগুলো আপাতত না কিনলেও চলবে, সেসব কেনাকাটা আপাতত স্থগিত থাকবে। যেমন গাড়ি কেনার কথা জোরালোভাবে মানা করে দেওয়া হয়েছে। আর বৈদেশিক প্রশিক্ষণের বিষয়ে আগেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তবে ক্রয়সংক্রান্ত (প্রকিউরমেন্ট) বিষয়ের অধীন বিদেশে যাওয়ার প্রয়োজন হলে তাতে যাওয়া যাবে বলে জানান তিনি। এ ছাড়া বৈদেশিক সাহায্য সংক্রান্ত বিষয়েও বিদেশে যাওয়ার সুযোগ আছে বলে জানান তিনি। অর্থাৎ প্রকিউরমেন্ট বিষয় ছাড়া অন্যান্য বিষয়ে সরকারি টাকায় বিদেশ যাওয়া যাবে না। বিষয়টি তিনি আরও পরিষ্কার করতে গিয়ে বলেন, যেমন, সরকারের টাকায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ১০ জন স্টাডি ট্যুরে যাবেন, এটা বন্ধ হবে।

এ ছাড়া গাড়ি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়া, উৎপাদন বাড়ানোর বিষয়েও প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। এসব বিষয়ে সবাইকে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

এদিকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের দুইটি উড়োজাহাজে সংঘর্ষের ঘটনায় দায়িত্বে থাকা সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ব্রিফিংয়ে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন এখন থেকে এটা ফিক্সড করে দিতে হবে। কেন দুটো উড়োজাহাজে ধাক্কা লাগলো। উড়োজাহাজ তো একা একা ধাক্কা লাগতে পারে না, এখানে তো অনেকেই ডিউটি করে। এটা ওয়ার্ক আউট করে প্রত্যেকটা কাজের রেসপন্সিবিলিটি ফিক্সড করতে হবে। ওই সময়ে যারা দায়িত্বে ছিলেন সবাইকে এর দায় বহন করতে হবে এবং কীভাবে তাদের কমপেনসেট করতে হবে, এটা ফাইন্ড আউট করে কুইকলি ব্যবস্থা নিতে হবে।’

সূত্র জানায়, গত ২৬ জুন রাত ৯টায় শাহজালালে বিমানের বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজকে হ্যাঙ্গারে প্রবেশ করানোর সময় সেখানে পার্ক করে থাকা বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজের একটি পাখা এবং পাখার নিচের অংশে আঘাত লাগে। এতে ৭৩৭ উড়োজাহাজের বাম ডানা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অন্যদিকে ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজটির ডান ডানাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

আরো পড়ুন: যখন যে অবস্থা হবে, মানিয়ে চলতে হবে: প্রধানমন্ত্রী