পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ সফলভাবে সমাপ্ত করে উদ্বোধনের জন্য দক্ষিণ এশিয়ার পাঁচটি দেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশের জনগণকে অভিনন্দন জানিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইংয় জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৫ জুন সকল বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত বহুল প্রত্যাশিত পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করার পর দক্ষিণ এশীয় দেশ পাকিস্তান, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও ভুটান অন্যদের সাথে তাদের উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়েছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মুহাম্মদ শাহবাজ শরীফ শেখ হাসিনাকে লেখা এক বার্তায় পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের সমাপ্তিতে প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশের জনগণকে তার এবং তার দেশের পক্ষ থেকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান সেতুর উদ্বোধন ভ্রাতৃপ্রতীম বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রায় একটি গুরুত্বপূর্ণ যুগান্তকারী মাইলফলক উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটি বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই প্রবৃদ্ধির পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার দৃঢ় সংকল্পেরও প্রমাণ।’
তিনি আরও লিখেছেন যে ‘এই সুযোগে আমি আমার ব্যক্তিগত তরফ থেকে আপনার সুস্বাস্থ্য ও সুখ এবং বাংলাদেশের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণের চিরদিনের ক্রমবর্ধমান অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করছি।’
অপর একটি চিঠিতে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইবরাহিম মোহাম্মদ সোলিহ তার ও মালদ্বীপের জনগণের পক্ষ থেকে পদ্মা বহুমুখী সেতু উদ্বোধনের জন্য প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশের জনগণকে আন্তরিক অভিনন্দন ও আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, পদ্মা সেতু নি:সন্দেহে ঢাকা ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল এবং এর বাইরে সংযোগ বিস্তৃত করে বাংলাদেশের জনগণের জন্য অনেক অর্থনৈতিক ও সামাজিক সুবিধা বয়ে আনবে।
ইবরাহিম মোহাম্মদ সোলিহ আরও বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের ইতিহাসের গতিপথ পরিবর্তন করে মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদাকে অর্জন করতে এবং সকল বাংলাদেশী মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় এ মাইলফলক আরেকটি সোপান।তিনি উল্লেখ করেন, ‘দীর্ঘ প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতুর সমাপ্তি বাংলাদেশের উন্নয়নে আপনার গতিশীল নেতৃত্ব, নিষ্ঠা ও অঙ্গীকারের প্রমাণ।’
এছাড়া শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি গোতাবায়া রাজাপাকসেও ২৫ জুন বাংলাদেশ ও এর জনগণের জন্য একটি যুগান্তকারী অবকাঠামো প্রকল্প সম্পন্ন করে পদ্মা বহুমুখী সেতুর সফল উদ্বোধনের জন্য তার শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়েছেন।তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন যে, এই অর্জন ইতিবাচকভাবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও শিল্প অগ্রগতি বৃদ্ধির মাধ্যমে সংযোগ ও অন্তর্ভুক্তি বৃদ্ধি করবে। বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে উষ্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এবং উভয় দেশের জনগণের মধ্যে জোরালো বন্ধন রয়েছে উল্লেখ করে গোতাবায়া রাজাপাকসে বলেন, ‘আমরা পরস্পরের জন্য লাভজনক ক্ষেত্রে আমাদের সম্পর্ক আরও জোরদার করতে আগ্রহী।’তিনি বাংলাদেশের জনগণের সুস্বাস্থ্য, সুখ এবং প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত মঙ্গল ও অব্যাহত শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।
এদিকে নেপালের প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবা পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ায় শেখ হাসিনা, সরকার ও বাংলাদেশের জনগণকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, পদ্মা বহুমুখী সেতুর উদ্বোধন যা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলাগুলোকে সড়ক ও রেলপথের মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজধানী এবং অন্যান্য এলাকার সাথে সংযুক্ত করেছে তা বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য নতুন সুযোগ উন্মোচন করবে এবং এই অঞ্চলে যোগাযোগ বাড়াবে।
শের বাহাদুর দেউবা বলেন, ‘এই নতুন মেগা প্রকল্পের সমাপ্তি আপনার যোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ যে অগাধ আত্মবিশ্বাস অর্জন করেছে তা প্রতিফলিত করে।’তিনি আরও বলেন, ‘আমি আপনার সুস্বাস্থ্য, সুখ ও অব্যাহত শান্তি এবং বাংলাদেশের বন্ধুপ্রিয় জনগণের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির জন্য শুভকামনা জানাতে এই সুযোগটি সানন্দে কাজে লাগাচ্ছি।’
ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ড. লোটে শেরিং বাংলাদেশের নির্মাণ ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য কীর্তি পদ্মা বহুমুখী সেতু সফলভাবে সম্পন্ন করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশের জনগণকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের দীর্ঘতম ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার বহুমুখী সড়ক-রেল প্রকল্প উদ্বোধন করেছেন উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, ‘আমরা এমন একটি উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য আপনার অঙ্গীকার দ্বারা অনুগ্রাণিত হয়েছি।’
‘এ আইকনিক কাঠামোটি প্রত্যাশানুসারে আপনার দেশের এবং এর বাইরেও অর্থনৈতিক কর্মকা- বেগবান করতে অনেক দূর এগিয়ে যাবে,’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমার কোন সন্দেহ নেই যে আপনার আন্তরিক ও গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশে এই ধরণের আরও যুগান্তকারী প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে।’এই বিশেষ উপলক্ষে ডক্টর লোটে শেরিং বাংলাদেশের চির শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।
আরো পড়ুন: জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উদযাপন