প্রেমার উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প

উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প

স্বপ্নের শুরু ২০১২ সালে। ব্যবসা শুরুর আগে অনেক ভেবেছেন। সময় পেলেই ইন্টারনেট ফেসবুক ঘাঁটাঘাঁটি করতেন। এরমধ্যে তার স্বামীর সঙ্গে থাইল্যান্ড যান ব্যক্তিগত কাজে। থাইল্যান্ডের বাজার ঘুরে ঘুরে দেখে সিদ্ধান্ত নিলেন কাস্টমাইজড আইটেম নিয়ে কাজ শুরু করবেন। তখন বাংলাদেশে এসব আইটেমের প্রচলন কম ছিল। এভাবেই শুরু পথচলা।
উদ্যোক্তা রওনক আশরাফী প্রেমা। যার ব্যবসা শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালে। শপিং গ্লোরিস্ট নামে এফ-কর্মাস দিয়ে। দেড় লাখ টাকা পুঁজি নিয়ে শুরু। তখন ৫৫০ টাকা গড়ে প্রায় ৪৫টি অর্ডার পেয়েছিলেন। এই ৪৫ অর্ডারই এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা ছিল প্রেমার। ২০২১ সালে এসে সে তালিকা বেশ লম্বা হয়েছে। ১৭ হাজার কাস্টমার যুক্ত হয়েছেন শপিং গ্লোরিস্টের সঙ্গে। প্রতিমাসের হাজার খানিক কাস্টমারকে পণ্য ডেলিভারি দিচ্ছেন প্রেমা।

রওনক আশরাফী প্রেমা ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি এবং এইচএসসি পাশ করেন। ইনডিপেডেন্ট ইউনির্ভাসিটি থেকে বিবিএ, সাউথইস্ট ইউনির্ভাসিটি থেকে এমবিএ করেছেন। উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার আগে চাকরি করতেও চেষ্টা করেছিলেন তবে চাক্রীর প্রতি তার আকর্ষণ ছিল কম । পড়াশোনা শেষ করে তাই ব্যবসাতেই মনোযোগী হয়ে উঠেন। ইচ্ছা ছিল ব্যারিস্টারি পড়বেন। কিন্তু সে ইচ্ছা পূরণ হয়নি। এমবিএ করেছেন, মেজর ছিল এইচআর।

রওনক আশরাফী প্রেমা নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে বলেন, অনলাইন পেজের মাধ্যমে হোলসেলের বিজনেস করছি। আমার কাস্টমার ফিক্সড কিছু পেজসহ অনেক শপ মালিক আছেন। পাশাপাশি অনেক কর্পোরেট ক্লাইন্টও আছেন। যাদের চাহিদা অনুযায়ী প্রোডাক্ট দিচ্ছি। গত বছর থেকে করোনার জন্য অনলাইনের রিটেল সাইট অফ রেখেছি। করোনার কারণে নানা ধরনের সমস্যা হচ্ছে। পরিস্থিতি ভালো হলে অনলাইনে রিটেল কাজ শুরু করবো। ব্যবসার শুরুতে ২টি আইটেম নিয়ে কাজ শুরু করি। কিন্তু আস্তে আস্তে ভ্যারাইটিজ আইটেম নিয়ে কাজ করতে হয়েছে। স্পেশালি হোলসেল বেশি ফোকাস করা শুরু করেছি। যাই হোক, ব্যবসার পাশাপাশি আরও বেশ কিছু উদ্যোগের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছি। ই-কর্মাস সাইটের লাইভ কর্মাস নিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পার্টটাইম পরামর্শক হিসেবে কাজ করছি। পাশাপাশি বাংলাদেশে একটি সফটওয়্যার কোম্পানিতে হেড অব এইচআর হিসেবেও কাজ করছি। এছাড়া একটি কানাডিয়ান ক্লাউড কিচেন কোম্পানির সঙ্গে কাজ শুরু করবো। সেখানে ইতালিয়ান এবং ইন্ডিয়ান ফুড আইটেম এতে প্রাধান্য পাবে। বাংলাদেশে খুব তাড়াতাড়ি কাজ শুরু হবে প্রতিষ্ঠানটির।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে রওনক আশরাফী প্রেমা বলেন, ইচ্ছা আছে করোনা পরিস্থিতি ভালো হলে আউটলেট দেব বাংলাদেশে। পাশাপাশি নিজের উদ্যোগে নারীদের নিয়ে এমন কোনো প্রতিষ্ঠান করবো, যেখানে যেসব নারীরা ব্যবসা করতে চান, যাদের কোনো সাপোর্ট নেই, কাউকে চিনেন না, ভয় পাচ্ছেন, কিভাবে কি করবেন তাদের প্রাধান্য দেওয়া হবে। এছাড়া কিভাবে কাস্টমার হ্যান্ডেল করতে হয়, এমন বিষয়গুলো নিয়ে ট্রেনিং দেওয়া, যেন তারা ভালো মতো প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেরাই কিছু একটা করতে পারেন।