একুশে ফেব্রুয়ারিতে সহনশীলতার পরিচয় দিল আওয়ামী লীগ

বিএনপিকে আগে শহীদ মিনারে যেতে দিলো আওয়ামী লীগ

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর আগে বিএনপি নেতাদের মিছিলের সুযোগ করে দিয়ে সৌহার্দ পূর্ণ আচরণ করেছে আওয়ামী লীগ। সোমবার ( ২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে পৌনে সাতটার দিকে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতারা শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য নীলক্ষেত ১নং গেইটে জড়ো হয়। নিউমার্কেট এলাকার বলাকা সিনেমা হলের সামনে থেকে একটি মিছিল নিয়ে আজিমপুর কবরস্থান হয়ে পলাশী হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করার জন্য যাচ্ছিলো বিএনপি নেতাকর্মীরা।

ভোর থেকেই রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে এবং ব্যক্তিগতভাবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের দিকে দলে দলে আসতে শুরু করে মানুষের ঢল। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা সমবেত হন তাদের পূর্বনির্ধারিত স্থান নিউমার্কেটের দক্ষিণ ফটকের সামনের রাস্তায়। সকাল পৌনে সাতটা। তখনও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন শাখা ও অঙ্গসংগঠনের ব্যানারে আসছে মানুষ। সাড়ে সাতটার সময় সামনে থাকা কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ প্রভাত ফেরি শুরুর প্রস্তুতি নিয়েছেন, ঠিক এই সময়ে দেখা গেলো নিউমার্কেট মোড়ের কাছে বিএনপির প্রভাত ফেরির মিছিল।

আশেপাশের সবার চেহারায় তখন উৎকন্ঠার ছাপ সুস্পষ্ট। কি হয়! কি ঘটে। তারা একবার বিএনপির মিছিলের দিকে তাকায় আরেকবার আওয়ামী লীগের লাইনের সামনে থাকা নেতাদের দিকে। সেখানে তখন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, প্রচার সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কেন্দ্রীয় সদস্য আবদুল আউয়াল শামীম, শাহজাহান খান এমপি উপস্থিত।

কিন্তু নাহ। আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ অগ্রসর হলেন না। তারা রাস্তার একপাশে দাঁড়িয়ে থেকে বিএনপির মিছিলটিকে শহীদ মিনারের দিকে যেতে দিলেন। তাদের পাশ দিয়ে নানা শ্লোগান দিতে দিতে চলল বিএনপির প্রভাত ফেরি। আগে এসেও আধঘন্টার বেশি সময় অপেক্ষা করলো লীগের নেতাকর্মীরা।

ঘটনা জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা সচরাচর নিউমার্কেট এলাকায় সবাই জমায়েত হয়ে শহীদ মিনারে যাই, আজকেও আমরা নিউমার্কেটের সামনে থেকে শহীদ মিনারের উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছিলাম। এমন সময় বিএনপির একটি মিছিল আসলে আমরা তাদের যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছি। অবশ্য উস্কানিমূলক নানান বিতর্কিত স্লোগান দিতে দিতে তারা যাচ্ছিলো, এসব বিতর্কিত স্লোগান দেওয়ার পরেও আমাদের নেতাকর্মীরা যথেষ্ঠ ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের মিছিল নিয়ে শহীদ মিনারে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। অবশ্য বিএনপির এই মিছিল যাওয়ার সুযোগ করে দিতে গিয়ে আমাদের প্রায় ৪০মিনিট অপেক্ষা করতে হয়েছে।’

আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানোটাই আজকের দিনের মূল লক্ষ্য। এখানে সবার প্রতি সবার সৌহার্দ পূর্ণ আচরণ হবে, সবার প্রতি সবার সন্মান থাকবে এটাই সবার কাম্য।’ ‘বিএনপির মিছিলটি আসার সঙ্গে সঙ্গে তাদের উস্কানীমূলক বক্তব্যের জবাব দেয়া যেতো, আমাদের নেতাকর্মীরা যথেষ্ট ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে সহানুভবতা দেখিয়েছে। তাদের জায়গা করে দিয়ে সৌহার্দ পূর্ণ আচরণ করেছে।’

আরো পড়ুন: রমজানে ১ কোটি পরিবার পাবে নিত্যপণ্য: বাণিজ্যমন্ত্রী