হোম বাংলাদেশ জাতীয় বিক্ষোভে উত্তাল টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়

বিক্ষোভে উত্তাল টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়

বিক্ষোভে উত্তাল টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়
সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ে

গতকাল সকাল থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা হয়,রেজিস্ট্রার জানায় পরীক্ষা অনলাইন নয় শারীরিকভাবে উপস্থিত থেকে দিতে হবে। এ সময় যদি কেউ করোনায় আক্রান্ত হয় তবে সে আর পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না,শিক্ষার্থীদের কোন দায়ভার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন নিবে না। এসময় শিক্ষার্থীরা দাবি জানান যদি প্রশাসন যদি দায়িত্ব না নেয় তাহলে পরীক্ষা অনলাইনে হোক তা হলে সকলেই সুরক্ষা থাকবে। রেজিস্ট্রার তাদের কথায় রাজি না হয়ে উত্তেজিত হয়ে বলেন ছাত্র মরলে আমাদের কি পরীক্ষা হবে অফ লাইনে।

সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভিতরে উত্তজনার সঞ্চার ঘটে তারা ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে তাদের সামনের রাস্তায় অবস্থান নেন এবং প্রসাশনের নানা অনিয়মের কথা প্ল্যাকার্ডে লেখে তা প্রদর্শন ও শ্লোগান দিতে থাকে। এ সময় সামাজিক সংগঠন সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন ও সহজ কথার টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে সচেতনতার সাথে শান্তিপূর্ণ অবস্থান নিয়ে শ্লোগান দিতে থাকেন প্রশাসনের নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে। এ সময় উল্লেখযোগ্য ভূমিকায় দেখা যায় সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের কর্মী আহনাফ তাহমিদ,তুষার আবদুল্লাহ, রায়হান পান্থ সহ আরো অনেক সাধারণ শিক্ষার্থীদের।নারী শিক্ষার্থীদের ভিতরেও এই অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা ও শ্লোগানে অংশগ্রহণ দেখা যায়।

এ সময় ঐ জায়গায় উপস্থিত হোন সামাজিক সংগঠন, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের ঢাকা মহানগরের সদস্য সচিব ও সহজ কথার সাধারণ সম্পাদক জনাব জুবায়ের আলম ও তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা ছাত্রলীগের সভাপতি জনাব জিললুর রহমান জীবন তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের জন্য উদ্যোগী হোন,জিললুর রহমান জীবন ভাইস চ্যানসেলরকে ফোন দেন তার নম্বরে কিন্তু তাকে পান না। তখন তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সাকিবকে উপস্থিত করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি আদায়ের ব্যাপারে সহযোগিতা করতে বলেন।

এ সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে কথা বলেন সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের ঢাকা মহানগরের সদস্য সচিব ও সহজ কথার সাধারণ সম্পাদক জনাব জুবায়ের আলম তিনি বলেন,আপনাদের সকল যৌতিক দাবির সাথে সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন ও সহজ কথা একমত পোষণ করছে।এই বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশের সমগ্র জেলা থেকেই সাধারণ শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করতে আসে তাদের দায়িত্ব এই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনের,যদি তারা বলেন তারা দায়িত্ব নিবেন না এটা তারা ভূল করছেন।বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের উপর থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আস্থা রাখতে পারছেন না কারণ ইতিপূর্বে প্রশাসন নানা অঙ্গীকার করলেও তারা বাস্তবায়ন করেন নাই,এই আস্থার যায়গা ফিরিয়ে আনার অনুরোধ করা হয়। পুলিশ প্রশাসনে যেন সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর চড়াও না হোন সে আহ্বান জানানো হয়। সর্বোপরি সাধারণ মানুষের দুরবস্থার কথা বিবেচনা নিয়ে ও ভি.আই.পি মুভমেন্ট আছে এই রাস্তায় তা স্মরণ করিয়ে দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের রাস্তা অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করে ক্যাম্পাসের ভিতরে অবস্থান নিতে অনুরোধ জানান জুবায়ের আলম।

এ সময় শিল্পাঞ্চল থানার সভাপতি জিললুর রহমান জীবনকে উল্লেখ যোগ্য ভূমিকায় দেখা যায় পুলিশ প্রশাসন যেন সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর চড়াও না হোন সেই সাথে বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতিকে দায়িত্ব দেন সাধারণ শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি আদায়ের লক্ষ্যে তাদের পাশে থাকার জন্য। এ সময় বিশ্ব বিদ্যালয় শাখার সভাপতি সাধারণ শিক্ষার্থীদের বলেন তিনি তাদের সাথে আছেন।আগামীকাল মিটিং এ তিনি সাধারণ শিক্ষার্থীদের সকল সমস্যা ডিন মিটিং এ তুলে ধরবেন এবং রাজি করানোর চেষ্টা করবেন যদি প্রশাসন রাজি না হয় তাহলে তিনি ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে রাজপথে থাকবে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত। এই আশ্বাসের ফলে,সাধারণ শিক্ষার্থীদের, পুলিশ,তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা ছাত্রলীগ, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন ও সহজ কথা সহযোগিতায় দীর্ঘ ২ ঘন্টা রাস্তা অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এবং চার দফা দাবি তারা পেশ করেন।

দাবি সমূহ:

১. অবিলম্বে হলসমূহে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুকি থেকে রক্ষা করতে হল বন্ধ করতে হবে।
২. অবিলম্বে অফলাইনের বিকল্প পদ্ধতিতে পরীক্ষা ব্যবস্থা করতে হবে। এক্ষেত্রে,বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ৩ দিন থেকে সর্বোচ্চ এক সপ্তাহ সময় নিয়ে নতুন রুটিনে অফলাইনের বিকল্প পদ্ধতিতে পরীক্ষা নিতে পারে,অথবা বর্তমান রুটিনের প্রথম দুটি পরীক্ষা পিছিয়ে বাকি পরীক্ষা গুলো পূর্বের রুটিন অনুযায়ী নিতে পারে।
৩.করোনাকালীন সময়ে চলমান টার্ম পরীক্ষা শেষ হয়ে গেলে,অবশ্যই চলমান টার্মের পরীক্ষা শেষ হওয়ার ১ সপ্তাহের মধ্যেই আগামী টার্মের ক্লাস অনলাইনে শুরু করতে হবে এবং দিন প্রতি অন্তত ৪টি এবং সর্বোচ্চ ৬টি ক্লাস নিতে হবে।
৪. করোনা পরিস্থিতি খারাপ এবং প্রশাসনের সিদ্ধান্তে বিলম্ব হওয়ার দরুণ যদি কোন শিক্ষার্থী হলে আক্রান্ত হয় অথবা সংক্রমিত হয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পরে,তার এবং তার পরিবারের সার্বিক দায়ভার প্রশাসনকে নিতে হবে।
৫. আমাদের উপরোক্ত দাবিগুলো আমলে নিয়ে আজকের মধ্যেই মৌখিক স্বীকৃতি এবং আগামী ৩ দিনের মধ্যে প্রশাসনকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে নোটিশ আকারে প্রকাশ করতে হবে। অন্যথায় আমরা সশরীরে স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে যে কোন শিক্ষাকার্যক্রম অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকবো।

নিবেদক
সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ
বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়