দুই যুগ আগেও ধারণা ছিল সুস্থ সুন্দর দেহ মানেই নাদুস-নুদুস দেহ। কিন্তু এখন অনেকেই আর সেটা মনে করে না। সুস্থ সুন্দর দেহ মানে এখন মেদহীন সিøম শরীর। তাই সচেতন মানুষ শরীর থেকে বাড়তি মেদ কমানোর জন্য কতভাবেই না চেষ্টা করছে।
শরীরের অতিরিক্ত মেদ সার্জিক্যাল উপায়ে অপসারণের সর্বাধুনিক পদ্ধতি এটা। অভিজ্ঞ সার্জন ধাতব নল চামড়ার নিচে প্রবেশ করিয়ে দেহের নির্দিষ্ট স্থানের মেদ স্তরকে ভেঙে ফেলেন এবং সাকশন যন্ত্রের সাহায্যে সেই মেদ বের করে আনেন। ৭০ দশকের শেষ দিকে সর্বপ্রথম ফ্রান্সে এ পদ্ধতিতে দেহ থেকে মেদ অপসারণ শুরু এবং রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ১৯৮১ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেনসহ সারা বিশ্বে প্লাস্টিক সার্জনরা লাইপোসাকশন পদ্ধতির ব্যাপক প্রয়োগ শুরু করেন। ইদানীং উন্নত বিশ্বে লাইপোসাকশন হচ্ছে- প্লাস্টিক সার্জারির সর্বাধিক প্রচলিত পদ্ধতি। শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই দুই লাখের বেশি রোগী প্রতি বছর লাইপোসাকশন করাচ্ছেন।
শরীরে কোন স্থানে লাইপোসাকশন করা যায়
দেহের আকার-আকৃতিকে সুন্দর সুদর্শন করে তোলাই লাইপোসাকশনের উদ্দেশ্য। পেট, নিতম্ব, উরুতে মেদ জমে দেহ অসুন্দর হয়ে যায়। এছাড়াও মুখ, ঘাড়, বাহু, কোমর, হাত-পা ও গলাসহ যেকোনো জায়গা থেকে মেদ সরিয়ে দেহের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা যায়। পুরুষদের বাড়তি স্তনের (মুহধবপড়সধংঃরধ) কারণে অনেকে বাসার ভেতরেও জামা পরে থাকতে বাধ্য হয়। এরা গেঞ্জি পরেও মানুষের সামনে আসতে লজ্জা পায়। লাইপোসাকশনের মাধ্যমে এ বাড়তি স্তনকে স্বাভাবিক আকৃতিতে ফিরিয়ে আনা সম্ভব। অপারেশনের তুলনায় লাইপোসাকশন পদ্ধতি অতি সহজ ও জটিলতামুক্ত। তাই এ ধরনের সমস্যার জন্য এখন আর ওপেন অপারেশন প্রয়োজন হয় না।
কে লাইপোসাকশনের উপযুক্ত রোগী
সাধারণভাবে মোটামুটি ওজনের এবং স্বাভাবিক ত্বকের গুণাগুণ সম্পন্ন যে কেউ এ পদ্ধতিতে তার দেহের মেদ অপসারণ করে দেহের আকার-আকৃতি স্বাভাবিক করতে পারেন। স্বাভাবিক ত্বকের বৈশিষ্ট্য হলো মেদ অপসারণের পরে নিজস্ব স্থিতিস্থাপকতার গুণে তা আবার টান টান হয়ে যায়। তাই লাইপোসাকশনের পর চামড়া ঝুলে যাওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। তাই স্বাভাবিক ত্বকের যে কোনো বয়সের যেকোনো ব্যক্তি লাইপোসাকশন করাতে পারেন।
অপসারিত মেদ কি আবার জমা হবে
না, এ সম্ভাবনা একেবারেই নেই। জন্মগ্রহণের সময় যে পরিমাণ মেদ কোষ নিয়ে মানুষ পৃথিবীতে আসে, তার সংখ্যা নির্দিষ্ট। তাই কোনো স্থান থেকে একবার লাইপোসাকশন করে মেদ সরালে সেখানে আবার মেদ কোষ বাড়তে পারে না। তবে অনিয়ন্ত্রিত খাওয়া-দাওয়ার ফলে শরীরের অন্যান্য অংশে চর্বি জমতে পারে। কিন্তু যেখানে লাইপোসাকশন করা হয় সেখানে মেদ আর কোনোদিনই জমা হতে পারে না। অপসারিত মেদ বিদায় নেয় চিরদিনের জন্য।
সহকারী অধ্যাপক (চর্ম ও যৌন)
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
চেম্বার : কামাল স্কিন সেন্টার
গ্রিন রোড, ঢাকা
০১৭১১৪৪০৫৫৮