জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি সরকারের রাজনৈতিক ভুল সিদ্ধান্ত বলে মনে করে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডি। বেসরকারি গবেষণা সংস্থাটি বলেছে, তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে অর্থনীতি ও জনগণের জীবনযাত্রায় চাপ বাড়বে, তৈরি হবে অশোভন পরিস্থিতি। তাই জ্বালানি তেলের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহার করা উচিত।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডি ডিজেল ও কেরোসিন তেলের মূল্য বৃদ্ধির যৌক্তিকতা ও জীবনযাত্রায় এর প্রভাব তুলে ধরতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
এতে বলা হয়, জ্বালানি তেলের মূল্যস্ফীতির চাপ ধনীদের স্পর্শ করবে না। তবে নিম্ন ও মধ্যবিত্তের অভিঘাত তৈরি হবে। তেলের দাম বৃদ্ধি সরকারের রাজনৈতিক ভুল। প্রণোদনা হিসেবেও এই ব্যয় সমন্বয় করা যেত। আর ধর্মঘট করে চাপ দিয়ে বাসের ভাড়া অযৌক্তিকভাবে বৃদ্ধি করে নেয়া রাজনৈতিক দুর্বলতার ফল বলে মনে করে সিপিডি।
জ্বালানি তেলের দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজার মূল্য বিশ্লেষণ করে সিপিডি জানায়, গত সাত বছরে এ বাবদ সরকারের লোকসানের চেয়ে মুনাফার পরিমাণ বেশি। এ ছাড়া বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) বিক্রি ও সরবরাহ পর্যায়ে শুল্ক প্রত্যাহার করে নিলেই দাম বৃদ্ধির প্রয়োজন পড়তো না। করোনার অভিঘাত থেকে পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়ায় জ্বালানি তেলের দর বৃদ্ধির সিদ্ধান্তে সাধারণ জনগণ চাপে পড়বে। অর্থনীতি পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া বিলম্বিত হবে। বিপিসির ব্যবস্থাপনাগত ত্রুটি আছে, অনেক ক্ষেত্রেই দুর্নীতি হয়। ভর্তুকি থেকে সরকারকে বের হতে হবে, তবে এখন সেই উপযুক্ত সময় নয়। কারণ এখনও করোনা মহামারি বিদ্যমান।
প্রতিষ্ঠানটি বলছে, ২০০৮ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত সরকারি প্রতিষ্ঠান বিপিসি ৩৮ হাজার ৬শ কোটি টাকা লোকসান দেয়। তবে ২০১৫ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত লাভ করেছে ৪৩ হাজার কোটি টাকা। সরকার গত দু বছরে বিপিসির থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা নিয়েছে। জ্বালানি খাতে বছরে অতিরিক্ত ৭ হাজার ২শ কোটি টাকা ভর্তুকি দিলে আর এই দাম বাড়ানোর প্রয়োজন হতো না, এই ভর্তুকি দেয়ার সক্ষমতা সরকারের রয়েছে বলে মনে করে সিপিডি। তবে অর্থমন্ত্রী ভর্তুকির পক্ষে নন।
ডিজেলের দাম বৃদ্ধির ফলে পণ্যের উৎপাদন, রপ্তানি ও কর্মসংস্থানে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং সাধারণ মানুষের জীবন-যাপন কঠিন করে তুলবে বলে মনে করে সিপিডি।