মা ইলিশ শিকারের মহা উৎসব

শরীয়তপুর প্রতিনিধি

শরীয়তপুরের পদ্মা ও মেঘনা নদীতে মা ইলিশ শিকারের মহোৎসব চলছে। প্রতিদিন শত শত জেলে পদ্মা নদীতে কারেন্ট জাল দিয়ে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মা ইলিশ শিকার করছে। শত শত মন মা ইলিশ ধরা পড়ছে জেলেদের জালে। প্রতিদিন প্রায় শতাধিক লোক ইলিশ ,ঝাল সহ আটক করে জেল জরিমানা দেওয়া হচ্ছে । শুরেশ্বর ঘাটে খোলা হচ্ছে নতুন নতুন আড়ৎ। এ পর্যন্ত ৩২২ জেলের কারাদন্ড । তার পরেও থেমে নেই শরীয়তপুরে মা ইলিশ শিকার। তবে জেলা মৎর্স কর্মকর্তা বলছেন অভিযান আরো জোড়ধার করা হয়েছে।

জেলা মৎস অফিস , শুরেশ্বর ঘাট ও স্থানীয় জানায়, নড়িয়া উপজেলার চরআত্রা নওপাড়া, বাংলা বাজার সুরেশ্বর, জাজিরা উপজেলার বিলাসপুর ,পালের চর , বড় কান্দি ,ভেদরগঞ্জ উপজেলার গৌরাঙ্গ বাজার, স্টেশন বাজার, কাচিকাটা, দুলারচর, আলুর বাজার, গোসাইরহাট উপজেলার আবুপুর ফেরি ঘাট , চর ভেদরীয়া ফেরিঘাট , সাতপাড়, চরজালালপুর কোদালপুর এলাকায় পদ্মা ও মেঘনা নদীতে প্রায় প্রতিদিন হাজার হাজার জেলে ডিঙ্গি নৌকা, ইঞ্জিন চালিত নৌকা, সি-বোর্ট করে কারেন্ট জাল দিয়ে সরকারী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে হরদম মাছ শিকার করছে । জেলেরা মাছ ধরে নদীর পাড়ে এনে চোরা কারবাড়িদের কাছে স্বল্প মূলে বিক্রি করছে। ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে দেম। সেখানে গেলে মনে হয় ইলিশ বিক্রির মেলা বসছে। আর চোরা কারবারিরা মোটর সাইকেল যোগে, অটোরিক্সা যোগে, স্কুল ব্যাগে, বস্তাবন্দি করে মাছ গ্রাম অঞ্চলে এনে বাড়ি বাড়ি বিক্রি করছে। শরীয়তপুর জেলা মৎস্য বিভাগ, কোসগার্ড, র‌্যাব, পুলিশ, আনসার বিডিবি, ফায়ার সার্ভিস প্রশাসনের সহায়তায় কিছু কিছু জেলে ও মাছ ক্রেতাদের নাম মাত্র কিছু সংখ্যক লোকদের গ্রেফতার করলে ও হাজার হাজার জেলে প্রকাশ্যে দিনরাত মাছ শিকারে মেতে উঠছে। এ পর্যন্ত জেলা শরীয়তপুর জেলা মৎস নড়িয়া ,জাজিরা ,ভেদরগঞ্জ, গোসাইর হাট উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ১৩৪ টি অভিযান পরিচালনা করে ৩২২ জন কে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। ৪ লাখ ৯ হাজার টাকা জরিমানা ,২২ লাখ ৩৯হাজার মিটার কারেন্ট জাল জব্ধ করেছে। এ সময় ৭৬৭ কেজি ইলিশ মাছ জব্দ করা হয়েছে যা বিভিন্ন উপজেলার এতিম খানায় বিতরন করা হয়েছে। পাশাপাশি ৩৬ টি মোবাইল কোর্টেও মাধ্যমে৩৯৪ টি নিয়মিত মামলা করা হয়েছে।

এ সকল মাছ বিক্রির জন্য নড়িয়া উপজেলার শুরেশ্বর পয়েন্টে নদীর পাড়ে নাছির বেপারী ,রনি বেপারী, আজিজুল মোল্লা ,সমুন দেওয়ান ,আদিল মুন্সি সহ অনেকে নতুন নতুন আড়ৎ খোলে মাছ কেনা বেচা করছে।শুরেশ্বর এলাকার স্থানীয় আলী সৈয়াল ,ফারুক মাঝি, আলম খা বলেন ,এবার আমাদের পদ্মা নদীতে মা ইলিশ নিধনের উৎসব চলছে। প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান করছে। এভাবে নিষেধাঙ্গা অমান্য কওে মা ইলিশ নিধন করলে আমাদেও জাতীয় মাছ ইলিশ হাড়িয়ে যাবে।

গোসাইর হাট উপজেলার আবুপুর এলাকার ভেদরীয়া ফেরি ঘাটের বজলু মেম্বার বলেন , এখানে সব সময় নিয়মিত ইলিশের কেনা বেচা চলছে। কেউ কিছু বলছে না।
শুরেশ্বর এলাকার আড়ৎদার আদিল মুন্সি বলেন ,আমার বিরোদ্ধে যে সকল অভিযোগ করা হয়েছে তা মিথ্যা ও বানোয়াট । আমি নিষিদ্ধ সময়ে মাছ ব্যবসার সাথে জড়িত নই।নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি ) অবনী শংকর রায় বলেন , আমরা পুজা মন্ডপে দায়িত্ত পালনে ব্যস্ত ছিলাম । সে কারনে আমরা অভিযান চালাতে পারিনি । সামনে কঠিন অভিযান পরিচালনা করবো।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রনব কুমার কর্র্মকার বলেন, এ পর্যন্ত শরীয়তপুর জেলায় মা ইলিশ রক্ষায় নড়িয়া ,জাজিরা ,ভেদরগঞ্জ, গোসাইর হাট উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ১৩৪ টি অভিযান পরিচালনা করে ৩২২ জন কে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। ৪ লাখ ৯ হাজার টাকা জরিমানা ,২২ লাখ ৩৯হাজার মিটার কারেন্ট জাল জব্ধ করেছে। এ সময় ৭৬৭ কেজি ইলিশ মাছ জব্দ করা হয়েছে যা বিভিন্ন উপজেলার এতিম খানায় বিতরন করা হয়েছে। পাশাপাশি ৩৬ টি মোবাইল কোর্টেও মাধ্যমে৩৯৪ টি নিয়মিত মামলা করা হয়েছে। সামনে অভিযান আরো জোড়দার করা হবে।