শরীয়তপুরে আ.লীগ নেতা ছামাদ মাস্টার হত্যা মামলায় ৪ জনের ফাঁসি ও ৯ জনের যাবজ্জীবন

শরীয়তপুর প্রতিনিধি :
১১ বছর আগের শরীয়তপুর সদর উপজেলার চিকন্দি সরফ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুস ছামাদ আজাদ মাস্টার হত্যা মামলায় চার আসামির মৃত্যুদন্ড এবং ৯ আসামির যাবজ্জীবন কারাদন্ডের রায় ঘোষণা করেছেন দ্রুত ট্রাইব্যুনাল। গতকাল বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মনির কামাল এ রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদন্ড প্রাপ্তরা হলেন- নুরুজ্জামান খান, জুলহাস মাদবর, চান মিয়া খান ও জাহাঙ্গীর মাদবর।

আর যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন- চন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম মোল্লা, ফারুক খান, আজিজল মাদবর, জলিল মাদবর, আজাহার মাদবর, লাল মিয়া মীর, মিজান মীর, এমদাদ মাদবর ও আক্তার গাজী। এছাড়াও অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আজিবুর বালী (৫০), খোকন বেপারী, সোরাব মোল্লা, আজাহার মোল্লা ও আব্দুল খন্দকারকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।

মামলার রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর মাহবুবর রহমান জানান, তারা এ মামলার রায়ে খুশি হয়েছেন। মামলাটির বিচারের সময় মারা যায় আসামি হাসান খান।

এর আগে মামলাটি বিচারের জন্য শরীয়তপুরের সিনিয়র দায়রা জজ আদালতে ২০১৪ সালে যায়। সেখানে ২০১৬ সালের ২০ জানুয়ারি আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন। পরে ২০১৮ সালের ৯ এপ্রিল মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর প্রজ্ঞাপন জারি হয়। ওই বছর ২১ জুন মামলার নথি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে আসার পর একই বছর ৯ সেপ্টেম্বর থেকে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়।

মামলার অভিযোগসূত্রে জানা যায়, শরীয়তপুর সদর উপজেলার চিকন্দি সরফ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুস ছামাদ আজাদ মাস্টার চন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তৎকালীন চেয়ারম্যান হালিম মোল্লার কাছে অল্প ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিলেন। পরবর্তী নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার পর জন্য তিনি এলাকায় পোস্টারিং করে আসছিলেন। পরে ২০১০ সালের ১৫ জানুয়ারি শিক্ষক ছামাদ আজাদ সন্ধ্যা ৭টার দিকে পালং থানাধীন সন্তোষপুর বাসস্ট্যান্ডস্থ লক্ষীর মোডের বাবুল মুন্সির কোকারিজের দোকান থেকে বের হয়ে রাস্তার ওপর আসার পরই তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। তাকে বাঁচাতে এগিয়ে এসে রহিম পেদা, ওয়াজেদ শীল, সেলিম ফকির, ইসাহাক মুন্সী ও বিশ্বজিৎ শীল গুলিবিদ্ধ হয়।

ওই ঘটনায় চন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান হালিম মোল্লা ও পাশ্ববর্তী মাদারীপুরের ছিলারচর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আজিবর বালীসহ ৩০ জন এবং অজ্ঞাতামানা ১৫/২০ জনের বিরুদ্ধে পালং থানায় একটি মামলা করেন নিহতের স্ত্রী ফেরদৌসি আকতার। মামলাটি তদন্তের পর একই বছর ১৪ আগস্ট একই থানার এসআই শহীদুল ইসলাম ১৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। পরে মামলাটি নারাজির ভিত্তিতে অধিকতর তদন্তে যায়। অধিকতর তদন্ত শেষে ২০১১ সালের ১১ মে একই থানার এসআই সুলতান মাহমুদ ১৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে।