হোম অর্থনীতি অনলাইনে ২ লাখ ৬৩ হাজার পশু বিক্রি মাত্র ১৫ দিনে

অনলাইনে ২ লাখ ৬৩ হাজার পশু বিক্রি মাত্র ১৫ দিনে

করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বিবেচনায় হাটের পাশাপাশি অনলাইনেও পশু বেচা-কেনার ব্যবস্থা করেছে সরকার। অনলাইনে গত ১৫ দিনে ২ লাখ ৬৩ হাজার ২১৬টি পশু বিক্রি হয়েছে। যা থেকে বিক্রেতাদের আয়ের পরিমাণ ১ হাজার ৮৩২ কোটি ৯৭ লাখ ৮৩ হাজার ২৫৭ টাকা। দেশে এবার কোরবানিযোগ্য পশু ১ কোটি ১৯ লাখেরও বেশি।

গত ২ থেকে ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে অনলাইনে পশু বিক্রির হিসেব তুলে ধরে এসব তথ্য জানিয়েছে প্রাণিসম্পদ অধিদফতর।

অধিদফতর জানায়, কোরবানির পশু কেনা-বেচার জন্য বর্তমানে অনলাইন প্লাটফর্মের সংখ্যা ১ হাজার ৭৬৮টি। এর মধ্যে সরকারি উদ্যোগে পরিচালিত হচ্ছে ৬০২টি আর বেসরকারি উদ্যোগে ১ হাজার ১৬৬টি। এসব অনলাইন বাজারে ১৫ দিনে ১৬ লাখ ৫৮ হাজার ৬১২টি কোরবানিযোগ্য পশুর তথ্য আপলোড করা হয়েছে।

এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৩২ হাজার ৩৮৩টি গরু-মহিষ এবং ২ হাজার ৮৯২টি ছাগল-ভেড়া, চট্টগ্রাম বিভাগে ১ লাখ ১৩ হাজার ৬৮১টি গরু-মহিষ এবং ২৪ হাজার ৫১৩টি ছাগল-ভেড়া, রাজশাহী বিভাগে ২২ হাজারটি গরু-মহিষ এবং ১৫ হাজার ২৯১টি ছাগল-ভেড়া, খুলনা বিভাগে ৭ হাজার ৪০৪টি গরু-মহিষ এবং ৫ হাজার ৭২৯টি ছাগল-ভেড়া, বরিশাল বিভাগে ১ হাজার ৫৫১টি গরু-মহিষ এবং ২৮০টি ছাগল-ভেড়া, সিলেট বিভাগে ২ হাজার ৫৮৬টি গরু-মহিষ এবং ৩৩টি ছাগল-ভেড়া, রংপুর বিভাগে ২৩ হাজার ৪১০টি গরু-মহিষ এবং ৯ হাজার ৮৭৪টি ছাগল-ভেড়া, ময়মনসিংহ বিভাগে ১ হাজার ২২৪টি গরু-মহিষ এবং ৬৫টি ছাগল-ভেড়া অনলাইনে বিক্রি হয়েছে।

এ বিষয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (সম্প্রসারণ) দেবাশীষ দাশ বলেন, ‘মানুষ এখন হাটে যেতে পারছেন, যে কারণে অনলাইনে পশু বিক্রি হয়ত একটু কম। আমাদের রিপোর্ট বলছে শুরুর দিকের তুলনায় বিক্রি কিছুটা কমেছে। অনলাইনে বিক্রির একটা সুবিধাও আছে, সাধারণত এগুলো শহরকেন্দ্রিক বিক্রিটা বেশি হয়। শহরের লোকজন কাছাকাছি এলাকার মধ্যে পছন্দসই গরু ভালো পেয়ে গেলে অনলাইনেই গরুটা কেনেন, তারা হাটে যেয়ে ধকল পোহাতে চান না। এ বছর আমাদের ১ কোটি ১৯ লাখ পশু প্রস্তুত আছে। আমরা চাই সব পশুই বিক্রি হয়ে যাক। কারণ জনগণ তো এটিকে ব্যবসা হিসাবে নিয়েই গরু লালন-পালন করছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘অনলাইনে গত বছর আমরা ৮৭ হাজার পশু বিক্রি করতে পেরেছিলাম। এবার তো গতবারের তিনগুণের বেশি বিক্রি হয়ে গেছে। লকডাউন পরিস্থিতি চললে আমরা আশা করছিলাম ২৫ শতাংশ এভাবে বিক্রি হবে। এখন যেহেতু লকডাউন শিথিল হয়ে গেছে হয়ত অতটা বিক্রি নাও হতে পারে। যেহেতু হাটে গিয়ে কিনতে পারছে মানুষ। আমরা আপলোডের বিষয়টিতে গুরুত্ব বেশি দিয়েছিলাম, জনগণের কাছাকাছি কতটুকু পৌঁছাতে পারছি সেটি দেখার জন্য। পরে ক্রেতা-বিক্রেতা নিজেরাই যোগাযোগ করে ক্রয়-বিক্রয় করছেন। আমরা শুধু দুই পক্ষকে যোগাযোগ করানোর মধ্যেই ইনভলভড ছিলাম।’

প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের তথ্যমতে, দেশে বর্তমানে ৪৫ লাখ ৪৭ হাজার গরু-মহিষ, ৭৩ লাখ ৬৫ হাজার ছাগল-ভেড়া এবং অন্যান্য ৪ হাজার ৭৬৫ পশুসহ মোট ১ কোটি ১৯ লাখ ১৬ হাজার ৭৬৫টি কোরবানিযোগ্য গবাদিপশু রয়েছে। ২০২০ সালে যার পরিমাণ ছিল ১ কোটি ১৮ লাখ ৯৭ হাজার ৫০০টি। এর মধ্যে প্রায় ৯৪ লাখ ৫০ হাজার ২৬৩টি পশু কোরবানি করা হয়েছিল।

গত ২ জুলাই থেকে জেলাভিত্তিক অ্যাপ, ফেসবুক পেজ ও বিভিন্ন অনলাইন সাইটের মাধ্যমে পশু বিক্রি শুরুর উদ্যোগ নেয় প্রাণিসম্পদ অধিদফতর। আর ৪ জুলাই ‘ডিজিটাল হাট’ নামে আরও একটি প্ল্যাটফর্মের উদ্বোধন করা হয়।