অস্ট্রেলিয়া ছেড়ে চলে এসেছি কিন্তু সেই শিক্ষাটুকু বুকে ধারণ করে রেখেছি; অন্তত রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছি প্রতিনিয়ত। সদিচ্ছা – একাগ্রতা এবং পজিটিভ মানসিকতা এই ৩ টির সমন্বয় ঘটাতে পারলে জীবনে চলতে আপনার হয়তো কাউকেই প্রয়োজন নাই। জি, এটা একেবারেই সত্য এবং আমি খুব কাছ থেকে এই সত্যটার উপলব্ধি করেছিলাম।
২০১৭-২০১৮ এর এর অক্টোবর পর্যন্ত প্রায় দেড় বছরের উপরে আমি অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে ছিলাম। আমাদের বাসা ছিল Epping এ। ওই এলাকাতে বেশিরভাগ Aussie রাই থাকতেন। তো একবার আমি কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে ট্রেন থেকে নেমে যখন বাসে উঠলাম, কিছুক্ষণ পর ওই বাসে একজন অন্ধ ব্যক্তি উঠলেন এবং বাসের ড্রাইভার সবাইকে উদ্দেশ্য করে বললেন – উনি Helington স্ট্রিটে যাবেন, কেউ কী আছেন যিনি তাকে তার বাসা পর্যন্ত নিয়ে যেতে হেল্প করতে পারবেন? আমার বাসাটা ছিল হেলগংটোন স্ট্রিটের দুইটা রোড পরেই Hammer স্ট্রিটে। আমি হাত উঁচু করে বললাম – আমি নিয়ে যেতে চাই! এরপর আমিসহ ওই ভদ্রলোক বাস স্টপেজ এর নির্দিষ্ট পয়েন্টে নেমে গেলাম। এরপর আমি তার হাত ধরে হাঁটতে থাকলাম এবং পথ দেখানো শুরু করলাম। নাম Alex Stalen, বয়স ৬২ বছর। প্রায় ০৫ বছর যাবত একেবারে অন্ধ কিছু দেখতে পান না।
এতক্ষণ পর্যন্ত সবকিছু ঠিক ছিল কিন্তু তখনই আমি রীতিমত হতভম্ব হয়ে গেলাম যখন শুনলাম – তিনি তার বাসাতে একেবারেই একা থাকেন এবং সেটাও গত ৫ বছর যাবত। স্ত্রী অনেক আগেই মারা গিয়েছে এবং দুই ছেলে আমেরিকায় থাকে। আমি বারবার শুধু জিজ্ঞেস করছিলাম তোমার ঘরের কাজ তোমার টেককেয়ার এসব কিছু কে করে তাহলে?? আমাকে আরো চমকে দিয়ে তিনি খুব বলিষ্ঠ স্বরে বললেন – কেন আমি নিজেই সব কিছু করি? এই ব্যাপারটি আমাকে এতটাই নাড়া দিয়েছিল সম্ভবত বাকি পথ টা তেমন কোনো কথা হয়নি। তার বাসায় যখন পৌঁছে গেলাম তিনি আমাকে ধন্যবাদ দিলেন একবার নয় কয়েক বার। এরপর তিনি চলে গেলেন তবে আমি কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলাম। দেখলাম তিনি নিজে নিজেই বাসার তালা খুলে ভেতরে ঢুকলেন। এবং আসলেই মনে হলো ওই বাসা তে কেউ নাই।
এরপর থেকে প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার আমি যেতাম তার সাথে দেখা করতে। একটা মানুষ অন্ধ হয়েও কিভাবে দিনের পর দিন একা একা বসবাস করছে এবং নিজের সবকিছু সে নিজেই করছে এটা নিজের চোখে দেখার পরেও কেন জানি আমার বিশ্বাস হতো না। অস্ট্রেলিয়া থেকে চলে এসেছি কিন্তু সেই ঘটনাটা আজও আমাকে ভীষণ নাড়া দেয়। এ্যালেক্সের কথা মাঝেমধ্যে খুব মনে পড়ে। আমি পারব, আমাকে পারতেই হবে – এই দুইটি জিনিস আয়ত্তে আনতে পারলে এই পৃথিবীতে সকল মানুষই মনে হয় তার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছে যেত কারণ মানুষ চাইলে সব কিছুই পারে কথা হল সে মন থেকে চায় কিনা এবং সেই চাওয়ার সাথে তার সদিচ্ছা এবং একাগ্রতা আছে কিনা!!
উদ্যোগ বয়স – ১১ মাস। “উই” থেকে প্রাপ্ত গ্রাহক সংখ্যা – ৬৬৭ জন।
প্রবাসী গ্রাহক রয়েছেন – ৪৫ জন।
রিপিট কাস্টমার হয়েছেন – ১৬৯ জন।
রেগুলার কাস্টমার আছেন – ৫৬ জন। আমি জেরিন হান্নান কাজ করছি পদ্মার ইলিশ এবং নদীর দেশীয় মাছ নিয়ে চাঁদপুর থেকে স্বত্বাধিকারী – “মাছের হাট বাজার”



page: https://www.facebook.com/macherhatbazarbd
আর আর এন/