হঠাৎ দুই নেতার পদত্যাগ ,নতুন ‘ষড়যন্ত্রের’ সূত্রপাত হিসেবে দেখছেন বিএনপির নীতিনির্ধারকেরা।

অবশ্য মো. হানিফ পদত্যাগের পেছনে ‘অন্য কিছু’ নেই বলে দাবি করেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার বয়স ৬৮ বছর। শরীরটা ভালো যাচ্ছে না। নতুন প্রজন্মকে সুযোগ করে দিতে পদত্যাগ করেছি।’

মো. হানিফ ও মো. শাহজাহান মিয়া পদত্যাগপত্রে স্বাস্থ্যগত কারণের কথা উল্লেখ করেছেন।

একসঙ্গে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে মো. হানিফ বলেন, ‘কথা ছিল আমি আগে পদত্যাগ করব, পরে উনি (মো. শাহজাহান মিয়া) করবেন। শেষে ওনার পরামর্শে দুজন একসঙ্গেই করলাম।’

এ বিষয়ে মো. শাহজাহান মিয়া গতকাল রোববার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আর ভালো লাগছিল না, শরীরটাও ভালো না। তাই পদত্যাগ করেছি।’ আবার কখনো রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না, জানতে চাইলে কিছুটা সময় নিয়ে তিনি বলেন, ‘মনে হয় না।’

বিএনপি সূত্র জানায়, ২০২৩ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনকেন্দ্রিক কিছু পরিকল্পনা নিয়ে ওই দুই নেতা কাজ করছিলেন। এর মধ্যে ২০–দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে সক্রিয় করার পরিকল্পনাও রয়েছে। এ লক্ষ্যে কিছু কাজ তাঁরা অনেক দূর এগিয়ে নিয়েছেন। দলটির নেতাদের কারও কারও ধারণা, সরকারি মহল বিষয়টি টের পেয়ে শুরুতেই এই পরিকল্পনা ভণ্ডুল করতে মাঠে নেমেছে। বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি করা এবং দুই নেতার একত্রে পদত্যাগের ঘটনার সঙ্গে যোগসূত্র আছে।

২০-দলীয় জোটের শীর্ষ পর্যায়ের একটি সূত্র জানায়, দলে উপযুক্ত কদর না পাওয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্ব নিয়ে হতাশা থেকে তাঁরা পদত্যাগ করেছেন।

জানা গেছে, ২০০৭ সালের এক-এগারো পরবর্তী পরিস্থিতিতে বেশ কয়েকজন অবসরপ্রাপ্ত সচিব, সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তা বিএনপিতে যোগ দেন। মো. শাহজাহান মিয়া ও মো. হানিফও ওই সময় বিএনপিতে যোগ দিয়েছিলেন। শাহজাহান মিয়া বিএনপির আগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক পদে ছিলেন। তিনি ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে পিরোজপুর-৩ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ছিলেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি মনোনয়ন পাননি, দলেও তাঁর কোনো পদও ছিল না। আর মো. হানিফ বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য। তাঁর সংসদীয় এলাকা সিরাজগঞ্জ-২। সেখানে বিএনপির প্রার্থী দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ। দুই নেতার পদত্যাগের বিষয়ে নাম উদ্ধৃত হয়ে কথা বলতে রাজি হননি বিএনপির উচ্চপর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতারা। তবে নাম না প্রকাশের শর্তে বিএনপির একজন কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, তাঁদের কাছে তথ্য আছে, দলের বিভিন্ন পর্যায়ের আরও কয়েকজন নেতা পদত্যাগ করতে পারেন। তাঁদের মধ্য অবসরপ্রাপ্ত একাধিক সামরিক কর্মকর্তাও রয়েছেন।