গেল বৃহস্পতিবার থেকে পুরো দেশজুড়ে চলছে সর্বাত্মক কঠোর লকডাউন আর এই সর্বাত্মক কঠোর লকডাউন মধ্যেও করোনায় মৃতদেহ দাফন বা সৎকার চলমান রেখে কাজ করে যাচ্ছে দেশের অন্যতম স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন “কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন”। জাত ধর্ম নির্বিশেষে করোনায় মৃতদের দাফন বা সৎকারে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে যাচ্ছেন কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের হাজারো আত্মোৎসর্গকারী স্বেচ্ছাসেবী। করোনার ছোবলে যখন আপনজনরা দূরে সরে যায়, তখন কোয়ান্টামের একদল স্বেচ্ছাসেবী মানবিকতার জায়গা থেকে পরম মমতা দিয়ে শেষ বিদায় জানাচ্ছে ঢাকা সহ সারাদেশে।
২০২০ সালের এপ্রিলে করোনার শুরু থেকেই করোনা বা করোনা উপসর্গে মৃত ব্যক্তিদের শেষকৃত্যে অংশ নিচ্ছে কোয়ান্টাম। নিজস্বপরিকল্পনা, নিজস্বঅর্থায়ন আর স্বেচ্ছাসেবকদের স্বেচ্ছাশ্রমে চলছে এ দাফন সেবা। কোয়ান্টাম দাফন সেবা কার্যক্রমে ঢাকার দাফন ক্যাম্পে অংশ নিয়ে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন দাফনকর্মীরা। বাসা থেকে এসেও অংশ নিচ্ছেন অনেকেই। ঢাকাতে দাফন সেবায় জড়িত রয়েছেন প্রায় দুই শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক। এসব স্বেচ্ছাকর্মীদের কেউ শিক্ষার্থী, কেউ শিক্ষক, কেউ সাংবাদিক, কেউ ব্যবসায়ী কেউ আবার আইনজীবী।
রয়েছে আলাদা নারী স্বেচ্ছাসেবক দল। মুসলিম ছাড়াও ভিন্ন ভিন্ন ধর্মের জন্য রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন স্বেচ্ছাসেবক দল। মানবিক মূল্যবোধ নিয়ে এগিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটির এই স্বেচ্ছাসেবক দল।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে যথাযথ ধর্মীয় রীতি মেনে চলছে কোয়ান্টামের এ সেবা।
উল্লেখ্য, কোয়ান্টামের বহুমুখী সেবার মধ্যে ২০০৪ সালে রাজশাহীতে দাফন সেবা কার্যক্রম চালু হয়। ২০২০ সাল থেকে এপর্যন্ত করোনাকালে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন করোনায় মৃতদের শেষকৃত্যে মানবিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পেরেছে। এখনো কঠোর এই লকডাউনের মধ্যেও ফোন পাওয়া মাত্রই কর্মীরা ছুটে যাচ্ছেন হাসপাতাল, বাসা, গোরস্থান কিংবা শশ্মানে। মানবিক মূল্যবোধ থেকেই দেশের যেকোনো দুর্যোগে সাধ্যমতো সেবা দিতে প্রস্তুত কোয়ান্টাম কর্মীরা।
২০২০ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় চার হাজার মরদেহের শেষকৃত্য সম্পন্ন করেছে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের কর্মীরা। এর মধ্যে মুসলিম ৩৪২৮ জন, সনাতন ৪৮৭ জন, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া ২২ জন এবং সমাধি করা হয়েছে ৩৪ জনের।
রাজধানীর কাকরাইলে কোয়ান্টাম দাফন কার্যক্রমের ইনচার্জ খন্দকার সজিবুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, গতকাল ১ জুলাই সারাদেশে সর্বাত্মক লকডাউনের প্রথমদিনে রাত পর্যন্ত ঢাকাতে আমরা ২০ জন মরদেহের শেষ বিদায়ে পাশে থাকতে পেরেছি।
হাসপাতাল ছাড়াও কাকরাইলে নিজস্ব গোসলখানায় ভাইরাসমুক্ত করে যথাযথভাবে শেষ সজ্জায় সাজিয়ে প্রয়োজনে কবরস্থান বা সমাধি পর্যন্ত চলছে কোয়ান্টামের এ সেবা।