নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
বরগুনার তালতলীতে ধর্ষণ ও হত্যার হুমকিতে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে এক কিশোরী। তালতলী প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী পরিবার। সংবাদ সম্মেলনের অভিযোগের বিষয়ে ধর্ষণ চেষ্টা মামলার আসামী আবুল হাসানের বক্তব্য নিতে গেলে শাহিন শাইরাজ নামের এক সাংবাদিকের ওপর হামলা চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা।
এসময় তাকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করা হয়েছে। বুধবার সকালে উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা সড়কে এ ঘটনা ঘটে। আহত সাংবাদিক তালতলী প্রেসক্লাবের দপ্তর সম্পাদক।
জানা যায়,উপজেলার পঁচাকোরালিয়া ইউনিয়নের মনসাতলী এলাকার হারুন মিয়ার ছেলে ছাত্রশিবির কর্মি আবুল হাসান একই এলাকার রাসেল মুসুল্লীর কিশোরী ভাগ্নিকে অশালীন মন্তব্য ও কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। হাসানের কু-প্রস্তাবে রাজি হয়নি ওই কিশোরী। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে হাসান অশ্লীল ছবি ধারন করতে টয়লেটে মোবাইল ক্যামেরা লুকিয়ে রাখে। এ বিষয়টি এলাকার জানাজানি হয়ে যায়। এতো আরো ক্ষিপ্ত হয় হাসান। গত ১১ মার্চ আবুল হাসান ও তার দুই সহযোগী রাসেল মুসুল্লীর বাড়িতে গিয়ে তার ভাগ্নিকে জোড়পূর্বক ধর্ষণ চেষ্টা চালায়। এ ঘটনায় বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে মামলা হয়। গত ৭ এপ্রিল তালতলী থানা পুলিশ আবুল হাসানকে ওই মামলায় গ্রেফতার করে। ওই মামলার এক মাস হাজতবাস শেষে জামিনে বের হয়। জামিনে বের হয়েই আবুল হাসান ওই কিশোরী ভাগ্নির মামা রাসেল ও স্বজনদের মামলা তুলে নিতে বলে। মামলা তুলে না নিলে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ শেষে হত্যার হুমকি দেয় হাসান। হাসানের জীবন নাশের হুমকিতে ওই কিশোরী পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
এ ঘটনায় ওই কিশোরীর মামা রাসেল বুধবার সকালে তালতলী প্রেসক্লাবে এসে বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলন শেষে উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা সড়কে শিবির কর্মী আবুল হাসানের সাথে প্রেসক্লাবের দপ্তর সম্পাদক সাংবাদিক শাহিন সাইরাজের দেখা হয়। সংবাদ সম্মেলনে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে তার কাছে জানতে চান শাহিন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আবুল হাসান ও তার সাথে থাকা শাহদাত হোসেনসহ ৭-৮জন সন্ত্রাসী বাহিনী প্রেসক্লাব নিয়ে বাজে মন্তব্য করেন এবং সাংবাদিক শাহিন শাইরাজের ওপর হামলা চালায় এতে শাহীনের মাথায় আঘাত ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম হয়। পরে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের জানান, সাংবাদিক শাহিন সাইরাজকে আবুল হাসান ও তার ৫-৬ জন সহযোগী মারধর করেছে। পরে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতাল পাঠিয়েছে। এবিষয়ে আহত সাংবাদিক শাহিন সাইরাজ বলেন,আবুল হাসানের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগি এক পরিবার। সেই বিষয়ে তার বক্তব্য নিতে গেলে আবুল হাসান ও শাহদাতসহ ৭-৮ জন সন্ত্রাসী প্রেসক্লাব নিয়ে বাজে মন্তব্য শেষে আমাকে মারধর করেন। এ বিষয়ে ধর্ষণ চেষ্টা মামলার আসামী আবুল হাসান মারধরের কথা অস্বীকার করে বলেন, মিথ্যা ধর্ষণ মামলার একটি বিষয়ে সাংবাদিক শাহিন সাইরাজের সাথে আমার কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায় শাহিন আমাকে মারধর করেছে। প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন দপ্তর সম্পাদক শাহিন শাইরাজের ওপর সন্ত্রাসী হামলায় আহতের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠ তদন্ত করে অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানাচ্ছি। তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মোঃ কামরুজ্জামান মিয়া বলেন, সাংবাদিক শাহিন সাইরাজকে আবুল হাসানসহ কয়েকজনে মারধর করেছে শুনিছি। এতে দু’জন আহত হয়েছে। এ বিষয়ে অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।