গতিবেগ বাড়িয়েছে ইয়াস: গতিপথ এখনো অপরিবর্তিত

সোমবার দুপুরে ইয়াস একই জায়গায় স্থির ছিল। পরে ঘণ্টায় ৪ কিলোমিটার বেগে এগোচ্ছিল উড়িষ্যা ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের দিকে।

ঘূর্ণিঝড়টি আরও শক্তি বাড়িয়ে ‘অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে’ রূপ নিয়ে বুধবার দুপুর নাগাদ সাগর দ্বীপ ও প্যারাদ্বীপের মধ্য দিয়ে উপকূলে আঘাত হানতে পারে বলে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে। তখন বাতাসের বেগ ঘণ্টায় ১৬৫ কিলোমিটারে উঠতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের গতিপথের চিত্র প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর। সেখানে দেখা গেছে, মঙ্গলবার (২৫ মে) ইয়াস প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেবে। এদিনই এটি অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে। অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় আকারেই বুধবার ভোরে ইয়াসের চোখ বা কেন্দ্রটি ভারতের উপকূলের কাছে যাবে এবং স্থলভাগে উঠবে। বুধবার সারাদিন তাণ্ডব চালিয়ে এ দিন শেষভাগে এটি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে। এরপর বৃহস্পতিবারের শুরুর দিকে ঘূর্ণিঝড় থেকে এটি গভীর নিম্নচাপে রূপ নেবে। বৃহস্পতিবার শেষ দিকে এটি নিম্নচাপে পরিণত হবে।

চিত্রে আরও দেখা গেছে, ঘূর্ণিঝড়ের চোখ বা কেন্দ্রটি বঙ্গোপসাগর থেকে সোজা ভারতের দিকে।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের চিত্র অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়টি কেন্দ্র আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে ভারতের উড়িষ্যায়। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আঘাত হানতে পারে পশ্চিমবঙ্গে। উড়িষ্যা-পশ্চিমবঙ্গের চেয়ে কম প্রভাব পড়বে বাংলাদেশে। বাংলাদেশ অংশে খুলনা উপকূল বিশেষ করে সুন্দরবনে এর বেশি প্রভাব পড়তে পারে। এছাড়া মিয়ানমারেও এর হালকা প্রভাব পড়তে পারে।

মঙ্গলবার ভোরে ইয়াস সম্পর্কিত ৯ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ইয়াস উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও আরও ঘনীভূত হয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে বর্তমানে একই এলাকায় অবস্থান করছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া আকারে ১১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকট সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে।

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া পরিস্থিতির কারণে প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ২৬ মে ভোর নাগাদ উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় পৌঁছতে পারে।

এটি আজ সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল বলেও জানানো হয়েছে বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে।