সাইনবোর্ডে হেফাজত-পুলিশ সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ২; উত্তপ্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া, অবরোধ-ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জস্থ সাইনবোর্ড এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে হরতাল সমর্থকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

রোববার (২৮ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে পুলিশ ও বিজিবির সদস্যরা হেফাজতের নেতাকর্মীদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। না সরে যাওয়ায় একপর্যায়ে ফাঁকা গুলি ছুড়ে বিজিবির সদস্যরা। এ সময় উভয়পক্ষে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ শুরু হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল থেকে হেফাজত সমর্থকরা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিজিবি পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে হেফাজত সমর্থকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থেমে থেমে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলছিল। বিজিবি ও পুলিশ সদস্যরাও থেমে থেমে টিয়ারশেল ছুড়ছিল।

অন্যদিকে কেরানীগঞ্জ থেকে মোহাম্মদপুর যেতে বসিলা ব্রিজ ব্লক করে বসে আছেন হেফাজতের কর্মীরা। এ সময় তাদের খুব কাছেই অবস্থান করছিল পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা। এছাড়া রাজধানীর গাবতলী ও টঙ্গী ব্রিজ এলাকার প্রবেশ মুখে কোনো সমস্যা হয়নি।

পাঁচ গাড়িতে আগুন : ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড থেকে কাচপুর এলাকায় দুইটি ট্রাক, একটি বাস ও একটি কাভার্ড ভ্যানসহ মোট পাঁচটি গাড়ি আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে হরতাল সমর্থকরা।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোখলেছুর রহমান সংঘর্ষের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সংঘর্ষে শফিকুল ইসলাম (৬৭) ও শাকিল (৩৫) নামে দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন এবং শাহাদাত (৩৫) নামে একজন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে শাকিলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে আর বাকি দুজনকে সিদ্ধিরগঞ্জের মা হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

অপরদিকে হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতাল সমর্থনে রোববার (২৮ মার্চ) সকাল থেকে উত্তপ্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া। জেলার বিভিন্ন সড়কে আগুন জ্বালিয়ে, গাছ ও খুঁটি ফেলে অবরোধ করেন মাদরাসাছাত্ররা।

এছাড়া শহরের ফুলবাড়িয়ায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকারের বাসভবনে, ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্কুলে ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত ভাষা চত্বরে, পৌরসভায়, জেলা পরিষদ, প্রেসক্লাবে, দক্ষিণ মৌড়াইলে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেলের বাড়িতে, সরকারপাড়ায় জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভনের বাড়িতে হামলা চালানো হয়।

hefajot
  • Save

অন্যদিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম গামী সোনার বাংলা ট্রেনে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ভাঙচুর করা হয়।

বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ারশেল ছোড়ে। এসময় বেশ কয়েকজন আহত হয়। তাদের জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

hefajot
  • Save

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সৈয়দ আরিফুল ইসলাম জানান, হাসপাতালে আসা আহতদের মধ্যে দুজন গুলিবিদ্ধ রয়েছেন। এর মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

hefajot
  • Save

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোজাম্মেল হোসেন রেজা বলেন, ‘আজকের পরিস্থিতি আপনারা নিজেরাই দেখছেন। জনগণের জানমালের রক্ষায় আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এসব তাণ্ডব চালাচ্ছে জামায়াত, শিবির ও বিএনপি।’