ঢাকা : করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবিলায় দায়িত্বে অবহেলার দায়ে বেশ কিছু সিনিয়র কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন হুবেই হেলথ কমিশনের পার্টি সেক্রেটারি ও কমিশনের প্রধান।
এছাড়া পদ হারিয়েছেন আরো অনেক কর্মকর্তা। করোনা ভাইরাস নিয়ে এ পর্যন্ত এটাই সবচেয়ে বড় পদের কোনো কর্মকর্তাকে সরিয়ে দেয়ার ঘটনা। সরিয়ে দেয়া হয়েছে রেডক্রসের উপপরিচালককে। তিনি দাতব্যকাজে ব্যবহারের দান পরিচালনায় কর্তব্যে অবহেলা করেছেন বলে এমন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
রাষ্ট্রীয় মিডিয়ার মতে, হুবেই ও অন্যান্য প্রদেশে শত শত মানুষকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। কারো বিরুদ্ধে তদন্ত করা হয়েছে। কাউকে সতর্ক করা হয়েছে। এসবই করা হয়েছে এই মহামারি চলাকালীন। শুধু যে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে এমন নয়। একই সঙ্গে ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি থেকে তাদেরকে শাস্তি দেয়া হয়েছে। এমন ঘটনার শিকার হয়েছেন রেডক্রসের উপপ্রধান ঝাং কিন। তাকে আন্তঃপার্টির তরফ থেকে সিরিয়াস সতর্কতা দেয়া হয়েছে। এ মাসের শুরুর দিকে উহানে পরিসংখ্যা ব্যুরোর উপপ্রধানকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। মুখের মাস্ক বিতরণে সংশ্লিষ্ট বিধি লঙ্ঘনের জন্য তার বিরুদ্ধে গুরুত্বর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। উহানের হুয়াংগাংয়ের স্বাস্থ্য বিষয়ক কমিশনের প্রধানকেও চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে করোনা ভাইরাস মোকাবিলা নিয়ে ক্রমবর্ধমান সমালোচনার মুখে রয়েছে চীন কর্তৃপক্ষ। যে চিকিৎসক প্রথম দিকে করোনা ভাইরাস ইস্যুতে সতর্কতা দিয়েছিলেন, কর্তৃপক্ষ তাকে চাপ প্রয়োগ করে নিষ্পেষণ করেছে। তার মৃত্যুতে জনগণের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
ইতোমধ্যেই করোনাভাইরাস সংক্রমণে চীনে নিহতের সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়েছে। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) শুধু হুবেই প্রদেশে মারা গেছেন ১০৩ জন। এর আগে একদিনে এত মানুষ মারা যান নি। সব মিলিয়ে সোমবার দিনশেষে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০১৬। তবে এদিন নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা শতকরা ২০ ভাগ কমেছে।
বিবিসির রিপোর্ট অনুযায়ী এখন চীনে আক্রান্তের সংখ্যা কমপক্ষে ৪২ হাজার ২০০। এর মধ্যে হুবেই প্রদেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩১ হাজার ৭২৮। সেখানে মারা গেছেন কমপক্ষে ৯৭৪ জন। মোট মৃত্যুর তিন-চতুর্থাংশ মারা গেছেন হুবেইয়ের রাজধানী উহানে। এই উহান থেকেই করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি। এখানে বসবাস করেন এক কোটি ১০ লাখ মানুষ। কয়েক সপ্তাহ ধরে এই শহরটি অচল হয়ে ভৌতিক রূপ নিয়েছে।