অর্থপাচারকারীদের দেশের শত্রু এবং জাতীয় বেঈমান বলেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, যারা দেশের টাকায় লেখাপড়া করে উচ্চশিক্ষিত হয়ে বিদেশে অর্থপাচার করছে, তারা কখনো দেশের বন্ধু হতে পারে না।
রোববার (২২ নভেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ কথা বলেন।
আগামী ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে অর্থ সচিব, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, এনবিআর চেয়ারম্যানকে এসব তথ্য দাখিল করতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে অর্থপাচারের ঘটনায় রুল জারি করেন আদালত। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে বিবাদীদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশিদ আলম খান।
আদেশের পর দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, গত ১৯, ২০ ও ২১ নভেম্বর দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের বক্তব্যের ওপর খবর প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে তিনি বলেছেন, রাজনীতিবিদরা নন, বিদেশে বেশি অর্থপাচার করেন সরকারি কর্মচারীরা। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সেসব খবর আমলে নিয়ে স্বপ্রণোদিত হয়ে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে রুল জারি করেছেন।
‘আদালত বলেছেন, আমরা মনে করেছিলাম রাজনৈতিক ব্যক্তিরা বিদেশে অর্থপাচার করছে। কিন্তু অর্থপাচারকারীদের মধ্যে সরকারি আমলার সংখ্যাই বেশি’—যোগ করেন খুরশিদ আলম খান।
এর আগে গত ১৮ নভেম্বর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বক্তব্য দেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘রাজনীতিবিদরা নন, বিদেশে বেশি অর্থপাচার করেন সরকারি কর্মচারীরা। আমার ধারণা ছিল রাজনীতিবিদদের সংখ্যা বেশি হবে। কিন্তু আমার কাছে যে তথ্য এসেছে, যদিও এটি সামগ্রিক তথ্য নয়, সেটিতে আমি অবাক হয়েছি। সংখ্যার দিক থেকে আমাদের অনেক সরকারি কর্মচারীর বাড়িঘর সেখানে বেশি আছে এবং তাদের ছেলেমেয়েরা সেখানে থাকেন। আমার কাছে ২৮টি কেস এসেছে এবং এর মধ্যে রাজনীতিবিদ হলেন চারজন। এছাড়া কিছু আছেন আমাদের তৈরি পোশাকশিল্পের ব্যবসায়ী। আমরা আরও তথ্য সংগ্রহ করছি।’
তার এ বক্তব্য নিয়ে দেশের সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত সেসব প্রতিবেদন আমলে নিয়ে অর্থপাচারকারীদের যাবতীয় তথ্য চেয়ে স্বঃপ্রণোদিত হয়ে হাইকোর্ট এ আদেশ দিলেন।