শবে বরাত পালন নিয়ে বিতর্ক নয়; কিছু দালিলিক আলোচনা

কুরআনের ভাষায় লাইলাতুম মুবারাকা, হাদিসের ভাষায়  লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান, ফার্সিতে শবে বরাত এবং বাংলাদেশে ভাগ্য বা মুক্তির রজনী। এই রজনী পালন সম্পর্কে পক্ষ-বিপক্ষ ও তর্ক বিতর্কের শেষ নেই। সাধারণ মানুষের মাঝে তো আছেই এমনকি কিছু আলেমও এ নিয়ে মতানৈক্য পোষণ করে। আগেই একটি কথা বলে রাখি- শবে বরাত পালনের বিপক্ষে যাওয়ার কোন সুযোগ নাই। আমি সে সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আকারে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি।

শবে বরাত হচ্ছে ফারসী শব্দ যা আরবী “শাবান” থেকে আগত।  কুরআনের ভাষায় লাইলাতুম মুবারাকা হল শাবান মাসের মধ্যরাত। এর চারটি নাম পাওয়া যায়, লায়লাতুল মুবারাকাহ (বরকতের রজনী), লায়লাতুল বারাআহ (ভাগ্য/কল্যাণের রজনী), লায়লাতুস সাক্ক (বন্টন/বাজেটের রজনী), লায়লাতুর রাহমাহ (অনুগ্রহের রজনী)। [তাফসীরে কাশশাফ, সুরা দুখান,৪:২৬৯] অনুরূপ বর্ণনা তাফসীরে ক্বুরতুবীতেও পাওয়া যায়।
শবে বরাতের আলোচনা “সিহা সিত্তার সহিহ মুসলিম, সহিহ ইবনে দাউদ, সহিহ নাসাই, শুনানে ইবনে মাজা” সহ অন্যান্য অনেক হাদিসগ্রন্থে পবিত্র শবে বরাতের মহিমা ও ফজিলত এসেছে। এ বিষয়ে অসংখ্য হাদিস বর্ণিত হয়েছে, যা লেখাটি দীর্ঘায়িত হওয়ার আশংকায় আমি পুরোপুরি উল্লেখ করতে ইচ্ছুক নই। তারপরেও এখানে খুবই সংক্ষিপ্ত আকারে দলিল পেশ করছি।

তাফসীরের আলোকে শবে বরাতঃ
১. প্রসিদ্ধ তাফসীরে কুরতুবীতে এসেছে,
ﻭﻟﻬﺎ ﺃﺭﺑﻌﺔ ﺃﺳﻤﺎﺀ : ﺍﻟﻠﻴﻠﺔ ﺍﻟﻤﺒﺎﺭﻛﺔ , ﻭﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﺒﺮﺍﺀﺓ , ﻭﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﺼﻚ , ﻭﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﻨﺼﻒ ﻣﻦ ﺷﻌﺒﺎﻥ –
অর্থঃ ইমাম কুরতুবী (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, এ রাতের ৪টি নাম আছে-
(ক). লাইলাতুম মুবারাকা, (খ). লাইলাতুল বারাআত (গ). লাইলাতুছ্ ছাক (ঘ). লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান।
(তাফসীরে কুরতুবী, খণ্ড-১৬ পৃষ্ঠা-১২৬)
২. তাফসীরে বাগভী শরীফে বর্ণিত আছে,
ﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﻋﺒﺎﺱ ﺭﺿﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﺃﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﻳﻘﻀﻰ ﺍﻷﻗﻀﻴﺔ ﻓﻰ ﻟﻴﻠﺔ
ﺍﻟﻨﺼﻒ ﻣﻦ ﺷﻌﺒﺎﻥ , ﻭﻳﺴﻠﻤﻬﺎ ﺇﻟﻰ ﺃﺭﺑﺎﺑﻬﺎ ﻓﻰ ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﻘﺪﺭ –
অর্থঃ নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ শবে বরাতের রাতে সকল বিষয়ের চূড়ান্ত ফয়সালা করেন এবং শবে ক্বদরের রাতে তা সংশ্লিষ্ট দায়িত্ববান ফেরেশতাদের কাছে ন্যস্ত করেন । (তাফসীরে বাগভী, খণ্ড-৭, পৃষ্ঠা ২২৮)
এ রকম ৬৫টি তাফসীর গ্রন্থে লাইলাতুম মোবারাকা বলতে শবে ক্বদরের পাশাপাশি মধ্য শাবান অর্থাৎ ১৪ শাবানের রাতের কথাও গুরুত্ব সহকারে বলা হয়েছে।

উল্লেখযোগ্য কিতাবসমূহের কয়েকটি-
(১).তাফসীরে ইবনু আবি হাতেম, খণ্ড-১২, পৃষ্ঠা-২১৪।

(২).তাফসীরে রুহুল মায়ানী, খণ্ড-২৫, পৃষ্ঠা-১১০।

(৩).তাফসীরে বাহরুল মুহীত, খণ্ড-৮, পৃষ্ঠা-২৪।
(৪).তাফসীরে ফাতহুল কাদীর, খণ্ড-৪, পৃষ্ঠা-৫৭০।

(৫).তাফসীরে যাদুল মাছির, খণ্ড-৭, পৃষ্ঠা-১২২।
(৬).তাফসীরে নাসাফী, খণ্ড-৩, পৃষ্ঠা-৩০২।
(৭). তাফসীরে নিসাপুরী, খণ্ড-৬, পৃষ্ঠা-৪৯০।
(৮). তাফসীরে কাশ্শাফ, খণ্ড-৪, পৃষ্ঠা-২৭২।
(৯).তাফসীরে নুকুত ওয়াল উয়ূন, খণ্ড-৬, পৃষ্ঠা-৪৯০।
(১০).তাফসীরে দুররে মানসূর, খণ্ড-১২, পৃষ্ঠা-৬৯।
(১১).তাফসীরে খাজেন, খণ্ড-৬, পৃষ্ঠা-১৪৩।
(১২).তাফসীরে আল বোরহান, খণ্ড-২৩, পৃষ্ঠা-১১৬।
(১৩).তাফসীরে রাযী, খণ্ড-১৭, পৃষ্ঠা-১৩৩।
(১৪).তাফসীরে আলুসী, খণ্ড-১৮, পৃষ্ঠা-৪২৪।
(১৫).তাফসীরে হাক্কী, খণ্ড-৫, পৃষ্ঠা-৬।
(১৬).তাফসীরে কুরতুবী, খণ্ড-১৬, পৃষ্ঠা-১২৭।
(১৭).তাফসীরে সাভী, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-৩০২।
(১৮).তাফসীরে ইবনে কাসীর, খণ্ড-৭, পৃষ্ঠা-২৪৬।
(১৯).তাফসীরে জামিউল বায়ান, খণ্ড-২০, পৃষ্ঠা-১৫১।
(২০).তাফসীরে নুসূকী, খণ্ড-৪, পৃষ্ঠা-১২০।
(২১).তাফসীরে কাদের, খণ্ড-৪, পৃষ্ঠা-১৬৬।
(২২).তাফসীরে মাযহারী, খণ্ড-৮, পৃষ্ঠা-৩৬৮।
(২৩).তাফসীরে কাসেমী, খণ্ড-৮, পৃষ্ঠা-৩৬৮।
(২৪).তাফসীরে কোশাইরী, খণ্ড-৩, পৃষ্ঠা-১৯০,
(২৫).তাফসীরে আবু সাউদ, খণ্ড-৬, পৃষ্ঠা-১৩০।
(২৬).তাফসীরে আয়াতুল আহকাম, খণ্ড-৪, পৃষ্ঠা-১৬৬।
(২৭).তাফসীরে রুহুল বয়ান, খণ্ড-৩, পৃষ্ঠা-৫৯৮।
(২৮).তাফসীরে কাশেফুল আসরার, খণ্ড-৯, পৃষ্ঠা-৯৪-৯৮।

(২৯).তাফসীরে মাওয়ারদী, খণ্ড-৪, পৃষ্ঠা-১০২।
(৩০).তাফসীরে সিরাজুম মুনির, খণ্ড-৩, পৃষ্ঠা-৪৫৮।
(৩১).কান্জুল ঈমান শরীফ।

হাদীসের আলোকে লাইলাতুল বরাতের দলীল:
======================
দলীল নং : ১
••••••••••
ﻋﻦ ﺍﺑﻰ ﻣﻮﺳﻰ ﺍﻻﺷﻌﺎﺭﻯ ﻋﻦ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ
ﻗﺎﻝ ﺍﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻟﻴﻄﻠﻊ ﻓﻰ ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﻨﺼﻒ ﻣﻦ ﺷﻌﺒﺎﻥ ﻓﻴﻐﻔﺮ ﻟﺠﻤﻴﻊ
ﺧﻠﻘﻪ ﺍﻻ ﻟﻤﺸﺮﻙ ﺍﻭ ﻣﺸﺎﺣﻦ ) ﺭﻭﺍﻩ ﺍﺑﻦ ﻣﺎﺟﻪ )
অর্থ : হযরত আবূ মূসা আশয়ারী (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) রাসূলে কারীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেন। রাসূলে পাক (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরশাদ ফরমান- মধ্য শাবানের রাত্রিতে আল্লাহ পাক রহমতের তাজাল্লী বষর্ণ করেন এবং তার সমস্ত বান্দাকে ক্ষমা করে দেন। কিন্তু মুশরিক বা শত্রুতাপোষণকারী ব্যক্তিকে ক্ষমা করেন না।
তথ্যসূত্র:
(১).ইবনে মাজাহ শরীফ, পৃষ্ঠা-১০০, হাদীস নং-১৩৮৯, মিশকাত শরীফ, পৃষ্ঠা-১১৫।
(২). ইমাম বায়হাকী,শুয়াবুল ঈমান, খণ্ড-৩, পৃষ্ঠা- ৩৮২।
(৩).ফাজায়েলুল আওকাত, পৃষ্ঠা-১৩৩, হাদীস নং-২৯।

(৪).মিসবাহুজ জুজাযাহ, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-৪৪২, হাদীস নং-৪৮৭।

(৫).আত তারগীব ওয়াত তারহীব, খণ্ড-৩য়, হাদীস নং-২৭১৮।
(৬).আহলে হাদীস তথা লা- মাযহাবীদের নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি নাসির উদ্দীন আলবানীর “সিলসিলাতুল আহাদিছে ছহিহা” এর খণ্ড-৩, পৃষ্ঠা-১৩১ আরো ৫ টি হাদীস রয়েছে।

দলীল: ২
•••••••
ﻋﻦ ﻣﻌﺎﺫ ﺭﺿﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ : ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ :
ﻳﻄﻠﻊ ﺍﻟﻠﻪ ﻓﻰ ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﻨﺼﻒ ﻣﻦ ﺷﻌﺒﺎﻥ ﺍﻟﻰ ﺍﻟﺴﻤﺎﺀ ﺍﻟﺪﻧﻴﺎ ﻓﻴﻐﻔﺮ
ﻟﺠﻤﻴﻊ ﺧﻠﻘﻪ ﺍﻻ ﻟﻤﺸﺮﻙ ﺍﻭ ﻣﺸﺎﺣﻦ
অর্থ : হযরত মুয়াজ বিন জাবাল (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, মধ্য শাবানের রাত্রিতে মহান আল্লাহ দুনিয়ার আসমানে জালওয়া রাখেন, অত:পর তাঁর সকল বান্দাকে ক্ষমা করে দেন। কিন্তু মুশরিক বা শত্রুতাপোষণকারী ব্যক্তিকে ক্ষমা করেন না।
তথ্যসূত্র:
(১). ইমাম বায়হাকী, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৩৮৩৩। (২).সহীহ ইবন হিব্বান, খণ্ড-১৩, পৃষ্ঠা-৩৫৫, হাদীস নং ১৯৮০।
(৩).আহলে হাদীস তথা লা- মাযহাবীদের নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি নাসির উদ্দিন আলবানীর “সিলসিলাতুল আহাদিস
আসসাহীহা”এর খণ্ড-৩, পৃষ্ঠা-১৩৫, হাদীস নং-১১৪৪। (৪).মুজামুল কাবীর, খণ্ড-১৫, পৃষ্ঠা-২২১।
(৫).ফাজায়েলুল আওকাত, পৃষ্ঠা-১১৯, হাদীস নং-২২। (৬).আত তারগীব ওয়াত তারহীব, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-২৪১।
দলিল নং-০৩
•••••••••••
আম্মাজান হযরত আয়েশা (রাদ্বিয়াল্লাহ আনহা) হতে বর্ণিত; এক রাত্রিতে আমি হুযুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) কে না পেয়ে খুজতে খুজতে জান্নাতুল বাকীতে পেলাম, এবং হুযুর ফরমালেন-আয়েশা তুমি কি জানো.? আজ ১৫ই শাবান এর রাত্রি এবং এই রাত্রিতে আল্লাহ তার বান্দাদের প্রতি আহবান করতে থাকেন যে, কেউ কি আছো যে আমার থেকে কিছু আশা কর, আমি আজকে তা প্রদান করিব । এবং হুযুর আরো বলিলেন যে এই রাত্রিতে আল্লাহ বানু ক্বাল্ব গোত্রের বকরির লোম এর চেয়ে বেশি পরিমান গুনাহগার লোক কে ক্ষমা করে থাকেন.(তিরমিজি শরিফ,খন্ড:-০২,হাদিস-৭৩৯)
দলিল নং-০৪
•••••••••••
উম্মুল মুমিনীন হযরত সায়্যিদাতুনা আয়িশা সিদ্দিকা বর্ণনা করেন: হুযুর আকরাম, নূরে মুজাস্সম, শাহে বনী আদম, রাসুলে মুহতাশাম, শফিয়ে উমামকে আমি শাবান মাসের চেয়ে বেশী রোযা অন্য কোন মাসে রাখতে দেখিনি। তিনি কিছু দিন ব্যতীত সম্পূর্ণ মাসই রোযা রাখতেন। (সুনানে তিরমিযী, ২য় খন্ড, ১৮২ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৭৩৬, দারুল ফিক্র, বৈরুত)
দলিল নং-০৫
•••••••••••
হযরত সাইয়েদনা আব্দুল্লাহ বিন আবু কাইস হতে বর্নিত- আমি হযরত আয়েশা (রাদ্বিয়াল্লাহ তায়ালা আনহা)থেকে শুনেছি যে, হুযুর(সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)এর সবচেয়ে পছন্দময় মাস ছিল শাবান মাস। কারন এই মাসে তিনি সব চেয়ে বেশি রোজা রাখতেন এবং এই মাসকে তিনি রমজানের সাথে মিলিয়ে দিতেন…. (সুনানে আবু দাউদ, খন্ড-০২, হাদিস-২৪৩১, ২৪৩১, পৃষ্ঠা-৪৭৬)
দালিল নং-০৬
••••••••••••
হযরত আলী হে বর্ণিত – হুযুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) ফরমালেন- যখন তোমাদের সামনে শাবান মাসের ১৫ই রাত্রির আগমন হয়, তাহলে তোমরা এই মাসে অনেক অনেক ইবাদত কর, রোজা রাখ।কারন আল্লাহ এই রাতে বিশেষ নজর দিয়ে থাকেন এবং বলে থাকেন কেউ কি আছো যে ক্ষমা চাচ্ছো তাকে আমি ক্ষমা করব, যে রিযিক চাও তার রিজিকে বরকত দান করব, কেউ মসিবতে থাকলে তার মুসিবত দুর করব।- (সুনান-ই-ইবনে মাজাহ, খন্ড-০২,পৃষ্ঠা-১৬০, হাদিস-১৩৮৮ এবং মিশকাত শরিফ-১১৫)
দলিল নং- ০৭
••••••••••••
হযরত সায়্যিদুনা ওসামা বিন যায়দ বলেন: আমি আরয করলাম: হে আল্লাহর রাসুল আমি দেখেছি, যেভাবে আপনি শাবান মাসে রোযা রাখেন সেভাবে অন্য কোন মাসে (রোযা) রাখেন না? তিনি ইরশাদ করলেন: রজব ও রমযান এর মধ্যবর্তী এ মাস রয়েছে। লোকেরা এটার থেকে উদসীন। এ মাসে মানুষের আমল সমূহ আল্লাহ তাআলার কাছে নেয়া হয় আর আমি এটা পছন্দ করি যে, আমার আমল এ অবস্থাতে উঠানো হোক যখন আমি রোযা অবস্থায় থাকি। (সুনানে নাসায়ী, ৩৮৭ পৃষ্ঠা, হাদীন নং- ২৩৫৪)
দলিল নং-০৮
•••••••••••
হযরত আয়েশা(রাদ্বিয়াল্লাহ আনহা) হতে বর্ণিত— হুযুর(সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) শাবান মাস থেকে বেশি রোজা আর কোন মাসে রাখতেন না, তাছাড়া হুযুর পুরো শাবান মাস রোজা রাখতেন এবং বলতেন নিজের নিজের যোগ্যতানুসারে এই মাসে আমল কর। কারন আল্লাহ ঔ সময় পর্যন্ত নিজের রহমত বন্দ করেন না যখন পর্যন্ত তোমরা নিজে থেকে ক্লান্ত না হয়ে যাও। (সহীহ বুখারী, ১ম খন্ড, ৬৪৮ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৯৭০)
দলিল নং-০৯
•••••••••••
হযরত আয়েশা(রাদ্বিয়াল্লাহ আনহা) হতে বর্ণিত–হুযুর(সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) আপনার কাছে সবচেয়ে বেশি কি পছন্দ কি শাবান মাসের রোজা..? হুযুর ফামালেন আল্লাহ এই মাসে বছরে মারা যাওয়া ব্যক্তির রুহ এর নাম লিখে থাকেন এবং আমি পছন্দ করি যে, আমি যেন ওফাতের সময় রোজা অবস্থায় থাকি। -মুসনাদে আবু ইয়ালা, খন্ড-০৪,হাদিস-৪৮৯০)
দলিল নং- ১০
•••••••••••
হযরত সায়্যিদুনা কাছির বিন মুররাহ্ থেকে বর্ণিত; নবীকুল সুলতান, সরদারে দোজাহান, মাহবুবে রহমান ইরশাদ করেছেন: “আল্লাহ তাআলা শাবানের ১৫তম রাতে সমগ্র যমীনের অধিবাসীদেরকে ক্ষমা করে দেন, (শুধু মাত্র) কাফির ও শত্রুতা পোষণকারীদের ছাড়া। (শুয়াবুল ঈমান, ৩য় খন্ড, ৩৮১ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৩৮৩০, দারুল কুতুবুল ইলমিয়্যাহ, বৈরুত)
দলিল নং-১১
•••••••••••
হযরত আয়েশা(রাদ্বিয়াল্লাহ আনহা) হতে বর্ণিত- হুযুর(সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) ফরমালেন- আমার কাছে জিবরাইল এসে ফরমালেন শাবান মাসের ১৫ রাতে আল্লাহ বানু কাল্ব এর বকরির লোম এর চেয়ে বেশি মানুষকে জাহান্নাম থেকে শিফা দান করে থাকেন।- (মুসনাদে ইমাম আহমাদ, খন্ড-০২, পৃষ্ঠা-৫৮৯, হাদিস-৬৬৫৬,/ শুবুল ইমান, খন্ড-০৩, পৃষ্ঠা-৩৮৩)
দলিল নং- ১২
•••••••••••
হুজ্জাতুল ইসলাম হযরত সায়্যিদুনা ইমাম মুহাম্মদ বিন মুহাম্মদ বিন মুহাম্মদ গাযালী বলেন: উল্লেখিত হাদীস শরীফে সম্পূর্ণ শাবানুল মুয়ায্যম মাসের রোযা দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে, শাবানুল মুয়ায্যম মাসের অধিকাংশ রোযা(অর্থাৎ মাসের অর্ধেক থেকে বেশী দিন)। (মুকাশাফাতুল কুলুব, ৩০৩ পৃষ্ঠা)
দলিল নং-১৩
•••••••••••
হযরত মুররাহ রাদ্বিয়াল্লাহ হতে বর্নিত—হুযুর(সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) ফরমালেন- আল্লাহ ফরমায়েছেন যে, শাবান মাসের ১৫তারিখের রাতে জমিনে থাকা মানুষদের ক্ষমা করে থাকেন কিন্তু কাফির এবং হিংসাপোসনকারীকে ক্ষমা করেন না। (আল মুতাজ্জুর রিবাহ, পৃষ্ঠা-৩৭৬, হাদিস-৭৬৯)
দলিল নং-১৪
•••••••••••
উম্মুল মুমিনীন হযরত সায়্যিদাতুনা আয়িশা সিদ্দিকা বলেন: আমি রাসুলে করীম, রউফুর রহীম, হুযুর পুরনূর কে ইরশাদ করতে শুনেছি, আলস্নাহ তাআলা (বিশেষত) চারটি রাতে কল্যাণেরদরজা খুলে দেন।
(১) কুরবানীর ঈদের রাত,
(২) ঈদুল ফিতরের রাত
(৩)শাবানের ১৫তম রাত।
এই রাতে মৃত্যুবরণকারীদের নাম ও মানুষের রিয্ক(জীবিকা) এবং (এ বৎসর) হজ্ব পালনকারীদের নাম লিখা হয়,
(৪) আরাফাহ (অর্থাৎ যিলহজ্জের ৮ ও ৯ তারিখে) এর রাত (ফজরের) আযান পর্যন্ত।(তাফসীরে দূররে মানসুর, ৭ম খন্ড, ৪০২পৃষ্ঠা)
দলিল-১৫
••••••••
‘ইমাম রাফে’ হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু উল্লেখ করেন, হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে যে, এ মাসের নাম ‘শা’বান’ এ জন্য রাখা হয়েছে যে, এ মাসে রোযা পালনকারীর সাওয়াব, মঙ্গল ও সৌন্দর্য শাখা-প্রশাখার ন্যায় বিস্তার লাভ করে যাতে রোযাদার জান্নাতে প্রবেশ করতে পারে। আল্লাহর সৃষ্টি জগতের মাঝে সকল সৃষ্টির একটি বড় আশা-আকাংখা ও আরজু থাকে মহানবী হুযূর পুরনূর সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর প্রিয় হওয়া। মাহে শা’বান এমন এক মর্যাদামণ্ডিত মাস যে মাসকে আল্লাহর প্রিয় রাসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম নিজের মাস বলে সম্বোধন করেছেন। তিনি বলেছেন ‘‘শা’বান আমার মাস, রমযান আমার উম্মতের মাস।’’ [ফিরদাউসূল আখবার]
দলিল নং-১৬
•••••••••••
খোদ শবে বরাত অস্বীকারকারীদের বাপ ওহাবী মতবাদের অন্যতম প্রবর্তক ইবনে তাইমিয়ার মতে-
ﻭﻗﺪ ﺳﺌﻞ ﺍﺑﻦ ﺗﻴﻤﻴﺔ ﻋﻦ ﺻﻼﺓ ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﻨﺼﻒ ﻣﻦ ﺷﻌﺒﺎﻥ ﻓﺄﺟﺎﺏ : ﺍﺫﺍ
ﺻﻠﻰ ﺍﻻ ﻧﺴﺎﻥ ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﻨﺼﻒ ﻭﺣﺪﻩ ﺍﻭﻓﻰ ﺟﻤﺎﻋﺔ ﺧﺎﺻﺔ ﻛﻤﺎ ﻛﺎﻥ ﻳﻔﻌﻞ
ﻃﻮﺍﺋﻒ ﻣﻦ ﺍﻟﺴﻠﻒ ﻓﻬﻮ ﺣﺴﻦ – ﻭﻗﺎﻝ ﻣﻮﺿﻊ ﺍﺧﺮ : ﻭﺍﻣﺎ ﻟﻴﻠﻪ
ﺍﻟﻨﺼﻒ
ﻓﻘﺪ ﺭﻭﻯ ﻓﻰ
ﻓﻀﻠﻬﺎ ﺍﺣﺎﺩﻳﺚ ﻭﺍﺛﺎﺭ ﻭﻧﻘﻞ ﻋﻦ ﻃﺎﺋﻔﺔ ﻣﻦ ﺍﻟﺴﻠﻒ ﺍﻧﻬﻢ ﻛﺎﻧﻮﺍ ﻳﺼﻠﻮﻥ
ﻓﻴﻬﺎ ﻓﺼﻼﺓ ﺍﻟﺮﺟﻞ ﻓﻴﻬﺎ ﻭﺣﺪﻩ ﻗﺪ ﺗﻘﺪﻣﺔ ﻓﻴﻪ ﺳﻠﻒ ﻭﻟﻪ ﻓﻴﻪ ﺣﺠﺔ ﻓﻼ
ﻳﻨﻜﺮ ﻣﺜﻞ ﻫﺬﺍ ﺍﻧﺘﻬﻰ –
অর্থাৎ- ‘‘ইবনে তাইমিয়াকে শবে বরাতের রাতে নফল নামায আদায় বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, যদি মানুষ শবে বরাত রাতে একাকী অথবা বিশেষ জামাত সহকারে নফল নামায আদায় করে, যেমনিভাবে সালফে সালেহীনগণের অনেকেই করতেন, তাহলে তা খুবই ভাল কাজ।’’ তিনি অন্যত্র বলেন, শবে বরাতের ফযিলতে অনেক হাদীস ও রিওয়ায়েত বিদ্যমান এবং এটাও প্রমাণিত যে, সালফে সালেহীনগণ এ রাতে বিশেষ নফল নামায আদায় করতেন। সুতরাং একাকীভাবে এ রাতে ইবাদতের ক্ষেত্রে সালফে সালেহীনগণ অগ্রগামী এবং এতে নির্ভরযোগ্য প্রমাণও মিলে। সুতরাং এ ধরনের বিষয়ে অস্বীকার করা যায় না।

হযরত সয়্যিদুনা আনাস বিন মালিক বলেন: শাবান মাসের চাঁদ দৃষ্টি গোচর হতেই সাহাবায়ে কিরাম কুরআনে পাকের তিলাওয়াতের প্রতি খুব বেশী মনোযোগী হতেন, নিজেদের ধন- সম্পদের যাকাত বের করে নিতেন (আদায় করতেন) যাতে অক্ষম ও মিসকীন লোকেরা রমযান মাসে রোযা রাখার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারে। শাসকগণ বন্দীদের তলব করে যার উপর শাস্তি কার্যকর করা প্রয়োজন তার উপর শাস্তি কার্যকর করতেন আর অন্যান্যদেরকে মুক্তি দিয়ে দিতেন। ব্যবসায়ীগণ তাদের কর্জ পরিশোধ করতেন, অন্যান্যদের থেকে বকেয়া টাকা আদায় করে নিতেন (এভাবে রমযান মাসের চাঁদ উদিত হবার পূর্বেই নিজেকে অবসর করে নিতেন) আর রমযান এর চাঁদ দৃষ্টিগোচর হতেই গোসল করে (অনেকে) ইতিকাফে বসে যেতেন। (গুনইয়াতুত্ব ত্বালিবীন, ১ম খন্ড, ৩৪১ পৃষ্ঠা, বড় পীর আব্দুল কাদির জীলানী রহ:)

এছাড়া পবিত্র শবে বরাত সম্পর্কিত হাদীসটি যেসব গ্রন্থে এসেছে। – ইমাম বায়হাকী ‘শুবুল ইমান,৩য় খন্ড, পৃ-৩৮০, ৩৮২, ৩৭৯, হাদিস-৩৮২২, ৩৮২৭) – মুসনাদে আহমাদ, ৬ষ্ঠ খন্ড, ১৮তম খন্ড-, পৃস্ঠা- ২৩৮, ১১৪, হাদিস-২৫৯৬, ১৬৮২(২১টি হাদিস রয়েছে) – ‘ফাজায়েলুল আওকাত পৃষ্ঠা-১৩৩, হাদিস- ২৫ – ‘মিসবাহুজ জুজযাহ, ১ম খন্ড, পৃ-৪৪২, হাদিস-৪৮৭, ৪৮৬ – ‘আত তারগীব ওয়াত তারহীব’ তৃতীয় খন্ড, ৪র্থ খন্ড, পৃষ্ঠা-২৪০ হাদিস-২৭১৮, ২৪, ২৭৬৯ – আহলে হাদিসদের গুরু নাসির উদ্দিন আলবানীর ‘সিলসিলাতুল আহাদিছে ছহিহা’ ৩য় খন্ড, পৃ-১৩১, ১৩৫  মাছাবাতাবিচ্ছুন্নাহ, পৃ-৩৫৪ – মাজমাউজ জাওয়ায়েদ, ৮ম খন্ড, পৃষ্ঠা- ৬৫ – মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা- ১০ম খন্ড, পৃষ্ঠা- ৪৩৮, হাদিস- ৯৯০৭।– শরহুসসুন্নাহ ৪র্থ খন্ড- পৃষ্ঠা-১২৬, হাদিস- ৯৯২, – আল মুনতাখাব মিনাল – ইবনে হিব্বান, খন্ড-১৩, পৃস্ঠা-৩৫৫, হাদিস-১৯৮০ – শুয়াবুল ঈমান- ৩য় খন্ড, পৃ-৩৭৯, ৩৮০ হাদিস- ৩৮২২, ৩৮২৭।

এছাড়া রয়েছে আরো অনেক অনেক হাদিস- যেখনে পবিত্র শবে বরাতের মহিমা প্রকাশ পেয়েছে। তাহলে আজকের যুগে যুব্বা পড়া এরা কারা, মাথায় ওড়ানা আর গলায় দড়ি ঝুলানো এসব মুসলমানের উদ্দেশ্যই বা কি যে তারা এতগুলো অসংখ্য হাদিস থাকার পরেও আজ বিভিন্ন ওয়াজে, টিভিতে বসে কথা উড়াচ্ছে যে ইসলামে শবে বরাত বলে কিছু নাই, শবে বরাত পালন একটি বিদাত, হারাম ইত্যাদি..? যারা এরুপ বলে সেইসব কাপুরুষ নামকাওয়াস্তে মুসলমানদের প্রকাশ্যে চ্যালেঞ্জ করলাম। পাঠক দেখলেনতো পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে কতগুলো গ্রন্থে, হাদিসে বর্ণিত হয়েছে..! আমি আগেও বলেছি এখানে লেখা দীর্ঘ করার ইচ্ছা না থাকায় আমি সংক্ষিপ্ত আকারে আপনাদের সামনের তুলে ধরলাম। তবে শবে বরাত উপলক্ষে আমাদের মাঝে কিছু আজব রীতি দেখা যায়, যেমন পটকা, আতশবাজী ইত্যাদি, এটা নিষিদ্ধ। এই পবিত্র রাতে ইবাদতে এই আতশবাজী মারাত্বক বিঘ্ন সৃষ্টি করে। তাই যারা পটকাবাজী করে তাদের মাঝে সচেনতা প্রচার প্রয়োজনে আইনের পদক্ষেপ নেওয়া জরুরী। কারন পবিত্র দিনের সাথে এই বানানো আতশবাজীর কোন সম্পর্ক নেই। পবিত্র দিনে আমাদের যেসব করণীয়…..
* শা’বান মাসকে রাসূল (দ.) নিজের মাস বলেছেন; তাই উম্মতের উচিত এ মাসে বেশী করে দরূদ শরীফ পড়া।
* অসংখ্য হাদীস শরীফে এ মাসে রোযার ফযিলত বর্ণিত হয়েছে, তাই বেশী করে রোযা পালন করা যা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর অধিক প্রিয় আমল ছিল।
* বেশী করে দান সদকা করা যা সাহাবা ও বুযুর্গানেদ্বীন (রহ.)-এর আমল ছিল। হাদীস শরীফেও এ ব্যাপারে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে।
* ‘‘লায়লাতুল মোবারাকা’’ বলতে যেহেতু শবে বরাতকে বুঝানো হযেছে তাই এ রাতে অধিক ক্বোরআন তিলাওয়াত করা।
* সূরা ইয়াসিন তিন বার পাঠ করলে রিযিক বৃদ্ধি পায় বলে অভিমত রয়েছে।
* হাদীস শরীফে রাত্রি জাগরণ থেকে ইবাদতের কথা বলা হয়েছে, তাই সারা রাত নফল নামাযের মাধ্যমে রাত্রি যাপন করা।
*সহীহ হাদীস দ্বারা শবে বরাতে রাসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম জান্নাতুল বাকীতে গিয়ে যিয়ারত করার দলিল রয়েছে বিধায় এরাতে কবর যিয়ারত করা।
* সন্ধ্যায় সওয়াবের নিয়তে গোসল করা।
* রোযা রেখে ইফতারের সময় নবীর (দ.) উপর ৩ বার দরূদ শরীফ পড়া।

এর পরও যারা শবে বরাতের রাতে বা শাবান মাসের ১৫ তারিখের রাতে (যে নামেই নামকরণ করেন জিনিস ওই এক) ইবাদাত বন্দেগী করা যাবে না বলেন, তারা মাথা ঠিক করে উলুমুল হাদিসের একটা কায়দা জেনে নিন। কোন নির্দিষ্ট একটি বিষয়ে যদি একাধিক সাহাবি একই বিষয়ে হাদিস বর্ণনা করেন তাহলে সেই হাদিসখানা যদি আলাদা আলাদাভাবে দইফ সনদেও আসে, তবুও স্বাক্ষীর আধিক্যের কারণে দইফ থেকে সম্মিলিতভাবে হাসান লি গাইরিহির পর্যায়ে উঠে যায়। আর শবে বরাতের রাতের ফজিলত ও ইবাদাত বন্দেগি নিয়ে এক দুইজন নয়, বরং ৮ জনের বেশি সাহাবি হাদিস বর্ণনা করেছেন। আম্মাজান আয়েশা (রাদিঃ) নিজেও আছেন সেই কাতারে। 

আর প্রায় সকল মুজতাহিদ ইমামগনের কাছে ফজিলতের ক্ষেত্রে (যে আমল ফরজ, ওয়াজিব বা সুন্নাহ মুয়াক্কাদা নয়) দইফ হাদিস অনুযায়ীই আমল করা যায়। সেখানে হাসান লিগাইরিহি হাদিস আছে অসংখ্য, এখানে আমল করতে তো কোন অসুবিধাই নাই। কাজেই দইফ হাদিসকে আপনারা বানোয়াট, জাল, মওদু হাদিসের কাতারে ফেলে চিন্তা করেন। জঘন্য কাজ এটা, নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামার হাদিসের উপরে জুলুম করার শামিল।

বিঃ দ্রঃ যারা দইফ হাদিস সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তারা এই আর্টিকেল “দুর্বল হাদিসের উপর সবলদের অত্যাচার” লেখাটা পড়তে পারেন।
লিংকঃ https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=10209622296312780&id=1789825010

লেখকঃ খতিব- ফয়যানে ইমাম হুসাইন রেলওয়ে শাপলা জামে মসজিদ