করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে বয়স বিবেচনায় ও মানবিক কারণে সরকার সদয় হয়ে দণ্ডাদেশ ছয়মাস স্থগিত রেখে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। একই সঙ্গে তিনি জানান, এ সময়ের মধ্যে খালেদা জিয়া নিজ বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে পারবেন। তবে বিদেশ যেতে পারবেন না। আজ মঙ্গলবার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক তার গুলশানের বাসায় সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, বিদেশ না যাওয়ার শর্তে ফৌজদারি কার্যবিধি ৪০১ ধারার ১ উপধারা মতে ৬ মাসের জন্য খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে তাকে মুক্তির বিষয়ে মতামত দিয়েছি। মতামত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে তাকে মুক্তির বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে এসময় তিনি বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন। দেশের বাইরে গমন করতে পারবেন না।
বাসায় অসুস্থ হলে তিনি কীভাবে চিকিৎসা নেবেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, চিকিৎসার যদি দরকার হয় তিনি বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে মানসম্মত হাসপাতালেই (বিএসএমএমইউ) আছেন। সেখানে তার চিকিৎসা চলছে। আর ভবিষ্যতে এ বিষয়টি অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বোঝা যাবে।
সরকারের সিদ্ধান্ত কখন থেকে কার্যকর হবে- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, যখন থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাকে মুক্তি দেবে তখন থেকে। উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজা পেয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে আছেন খালেদা জিয়া। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন।
ফাইল পেলে খালেদার মুক্তির বিষয়ে ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে এখনও কোনো ফাইল মন্ত্রণালয়ে এসে পৌঁছায়নি বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার মুক্তি সংক্রান্ত ফাইল আইন মন্ত্রণালয় থেকে পেলেই তার সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, ‘ফাইল আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।’
কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সরকার শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) বিকেলে গুলশানে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। আইনমন্ত্রীর এই বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তির জন্য আরও একটু অপেক্ষা করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি নিয়ে প্রক্রিয়া করতে হবে। উনি (আইনমন্ত্রী) যা বলেছেন ঠিক আছে, তিনি প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি নিয়েই বলেছেন। ওনার ফাইল এখনও অ্যাপ্রুভ (অনুমোদন) হয়ে আমাদের কাছে এসে পৌঁছায়নি। না আসা পর্যন্ত তো ওয়েট (অপেক্ষা) করতে হবে।