বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনা ভাইরাসকে মহামারী ঘোষণা করার পর বিশ্বের অনেক দেশ তাদের স্থল ও আকাশ পথে কড়াকড়ি আরোপ করেছে। দ্যা গার্ডিয়ান, টাইমস অফ ইন্ডিয়া, ডেইলি টেলিগ্রাফ, খালিজ টাইমস, রয়টার্স- এর তথ্য মতে গ্লোবাল ডেথ ৫০০০ ছাড়িয়েছে !
সতর্কতা স্বরূপঃ ১) পুরো ইউরোপ অলমোস্ট লকড ডাউন, ২) সুইজারল্যান্ডের মত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন দেশও সব বন্ধ করে দিয়েছে, ৩) ইউকে’র নেক্সট ১ মাসের সব পাবলিক ইভেন্ট স্থগিত ৪) স্পেনের রাণীর করোনা পজিটিভ, ৫) বৃটেনের রাণী নেক্সট ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত কোথাও যাচ্ছেন না, ৬) ইরানে রোগীদের চাইতে যারা সেবা দিচ্ছে তারাও মরছে অনেক, ৭) ফ্লাইট রাডার ২৪ সাইটে যারা রেগলার ভিজিট করেন তারা বুঝবেন ইন্টারন্যাশনাল ফ্লাইট কিভাবে কমে গেছে, ৮) করোনার প্রভাবে অর্থনৈতিক মন্দা কাটানোর জন্য লুফথানসা এয়ারলাইনস জার্মান সরকারের ফান্ডে সহায়তা করছে, ৯) ইটালীর সরকার দিশেহারা, ১০) আজকে ল্যাটিন আমেরিকায় প্রবেশ করলো করোনা, ১১) আফ্রিকার বেশ কয়েকটি দেশে আজকে ধরা পড়লো, ১২) পৃথিবীজুড়েই সব বড় ইভেন্ট স্থগিত করা হয়ে গেছে।
ভারত ইতালীর মিলানে এয়ার ইন্ডিয়ার স্পেশাল ফ্লাইট পাঠিয়েছে তাদের নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য, তামিলনাডুর সব স্কুল কলেজ বন্ধ, পাকিস্তান – চীন সীমান্তবর্তী জেলাগুলোয় অতিরিক্ত সতর্কতা, সব ধরণের গণ জমায়েত বন্ধ, ভারতে থাকা অনেক দেশের নাগরিককে তারা দেশে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছে।
বেশীরভাগ দেশই থেমে আছে৷ অথচ আমরা এইদেশে দিব্যি সব করে বেড়াছি, চাকরী করছি, ঘুরছি, খাচ্ছি, বাদ যাচ্ছেনা কিছুই! করোনা আছে কি নেই সেই প্রশ্ন সরকারের জন্যই বরাদ্দ থাকলো কিন্তু আমাদের সময় সচেতন হবার। এরকম একটা মহামারীর পর সবচেয়ে বড় ধ্বস নামে পৃথিবীর অর্থনীতিতে, কারেন্সিরেট ওলটপালট হয়ে যায়, জিনিসপত্রের দাম অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যাবে, করোনায় যত মানুষ মারা যাচ্ছে তার চেয়ে বেশী মারা যাবে দুর্ভিক্ষে হয়তোবা। ভারসাম্যহীন অর্থনীতি ডেকে আনবে ওয়ার্ল্ডের টপ কান্ট্রিগুলোর কদর্য রাজনীতি আর একে অন্যকে ধরাশায়ী করে টিকে থাকার যুদ্ধ, সেই যুদ্ধে এই ক্ষুদ্র আমরা কই থাকবো?
এদিকে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্তের পর এ রোগ থেকে রক্ষায় স্কুল-কলেজসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে। রিটে দেশের বিমান, নৌ ও স্থলবন্দরসহ সীমান্ত এলাকা বন্ধের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। রিটের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আইনজীবী ইউনুছ আলী।
তিনি জানান, দেশে করোনা আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে। এ অবস্থায় যদি শিক্ষার্থীরা করোনায় আক্রান্ত হয়, তা হলে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। তাই স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের দাবিতে রিট করা হয়েছে। আর দেশের সীমান্ত এলাকা বিশেষ করে স্থল, নৌ এবং বিমানবন্দর দিয়ে মানুষের যাতায়াত অব্যাহত রয়েছে, তাই এসব বন্দরও বন্ধের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
রোববার (১৫ মার্চ) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট করেন আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ। রিটে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্বাস্থ্যসচিব, শিক্ষাসচিব, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে বিবাদী করা হয়েছে।
আইনজীবী বলেন, সোমবার (১৬ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে শুনানির জন্য রিটটি উপস্থাপন করা হতে পারে। আইনজীবী জানান, করোনাভাইরাস থেকে রক্ষায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধে নির্দেশনা জারির আর্জি জানিয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে। রিটে সকল বিমান, নৌ ও স্থলবন্দরে করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তিকে শনাক্তে এবং সকল বন্দরের প্রবেশমুখে মনিটরিংয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনাও চাওয়া হয়েছে।
আবেদনে দেশের সব বন্দরে করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তিকে শনাক্ত এবং বন্দরের প্রবেশমুখে মনিটরিংয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ এবং সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধে কেন নির্দেশনা দেয়া হবে না এবং করোনাভাইরাস থেকে জনগণকে রক্ষায় সরকারের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না এ মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে। এছাড়া সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশনা, বন্দরসমুহে করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিকে শনাক্তে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে অন্তবর্তীকালীন নির্দেশনা জারির আর্জি জনানো হয়েছে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বলছে, গত আড়াই মাসে ভাইরাসটি ছড়িয়েছে বিশ্বের প্রায় ১২৭ দেশ ও অঞ্চলে। এ ভাইরাসের প্রভাবে ফ্লুর মতো উপসর্গ নিয়ে যে রোগ হচ্ছে, সেই কভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন এ পর্যন্ত এক লাখ ৩৪ হাজার ৭৬৯ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৭০ হাজার ৩৮৭ জন।
গত ৮ মার্চ প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে তিনজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়। তবে তারা সুস্থ হয়ে বাড়ি গেছেন বলে দাবি আইইডিসিআরের। তবে শনিবার (১৪ মার্চ) রাতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সংবাদ সম্মেলনে জানান, দেশে আরও দুজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।